.....



আসসালামু আলাইকুম। আমি মেহেদী হাসান। স্যার হেনরি রাইডার হ্যাগার্ডের লেখার বিশেষ ভক্ত। অনুবাদের কোয়ালিটি কেমন হয়েছে জানাবেন প্লিজ। এটা আমার প্রথম প্রচেষ্টা। আপনাদের ভালো লাগলে সম্পূর্ণ উপন্যাস রূপান্তরের চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

-----------------------------------------------------------------------------

"রেড ইভ" হল স্যার হেনরি রাইডার হ্যাগার্ডের একটি কালজয়ী ঐতিহাসিক উপন্যাস, যা প্রথম প্রকাশ পায় ১৯১১ সালে। এই উপন্যাসটি চতুর্দশ শতাব্দীর এক অস্থির সময়কে চিত্রিত করে, যখন ইউরোপে ব্ল্যাক ডেথ বা কালো মৃত্যু নামক ভয়াবহ মহামারী ছড়িয়ে পড়ে এবং ক্রেসির যুদ্ধে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত বেঁধে যায়। 

এই উপন্যাসে ঐতিহাসিক কাহিনীর সাথে ফ্যান্টাসি (কাল্পনিক) এবং অতিপ্রাকৃত (সুপারন্যাচারাল) বিষয় মেশানো হয়েছে। এর মূল গল্পটি ইভ ক্লেভারিং নামে এক দৃঢ়চেতা মহীয়সী নারীকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। তার প্রেম, যুদ্ধ এবং ভাগ্যের নানা জটিলতায় জড়িয়ে পড়ার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।

হ্যাগার্ডের অন্যান্য রচনার মতোই, "রেড ইভ"-এ রয়েছে নাটকীয় অ্যাডভেঞ্চার, নৈতিক দ্বন্দ্ব এবং রহস্যময় শক্তির উপস্থিতি—যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো 'মুর্গ' নামের চরিত্রটি, যাকে মৃত্যু এবং ভাগ্যের প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে। এই উপন্যাসের বিশেষত্ব হলো এর সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক বর্ণনা এবং প্রেম, ইতিহাস ও রূপক কাহিনীর অনন্য সমন্বয়। এটি হ্যাগার্ডের সাহিত্যকর্মের মধ্যে একটি স্বতন্ত্র স্থান দখল করে আছে।

-----------------------------------------------------------------------------

উৎসর্গ


ডিচিংহ্যাম, ২৭ মে, ১৯১১


প্রিয় জেহু,

পাঁচটি দীর্ঘ কিন্তু শান্তিপূর্ণ বছর ধরে, রয়্যাল কমিশনার হিসেবে পাশাপাশি বসে এবং ভ্রমণ করে, আমরা চেষ্টা করেছি সমুদ্রের প্রচণ্ড ঢেউ থেকে আমাদের উপকূল রক্ষা করার, অনুর্বর জলাভূমিকে উর্বর জমিতে পরিণত করার এবং পাথুরে পাহাড়কে ঘন সবুজ বনে ঢেকে দেওয়ার উপায় বের করতে।


এই সমস্ত পরিশ্রমের পরিণতি কী হবে, তা আমি জানি না; জানি না গম্ভীর ভূতত্ত্ববিদেরা কখনো রোমাঞ্চকর গল্প পড়েন কি না - যদি না তা হয় কালের কলমে পাথরে লিখে যাওয়া সেই মহাকাব্য। তবে আমাদের এই যৌথ সাধনার স্মৃতিচিহ্নস্বরূপ, এই কাজের অবসরে লিখিত একটি গল্প তোমায় উৎসর্গ করছি - অদম্য রেড ইভের আর দেবদূত মুর্গের কাহিনী, যার ভয়াল জাহাজ আজও পূর্ব থেকে পশ্চিমে, পশ্চিম থেকে পূর্বে নিরন্তর যাত্রা করে, এবং চিরকাল এমনি করেই যাত্রা করবে।


আপনার বন্ধু এবং সহকর্মী,

এইচ. রাইডার হ্যাগার্ড।


প্রাপক

ডা. জেহু

এফ.জি.এস., সেন্ট অ্যান্ড্রুজ, এন.বি.


-----------------------------------------------------------------------------


রেড ইভ

মার্ঘ: মৃত্যুদূত


যখন তৃতীয় এডওয়ার্ড সিংহাসনে বসেছিলেন এবং ক্রেসি যুদ্ধ তখনও ইতিহাসের পাতায় ধ্বনিত হয়নি, সেই সময়গুলোতে, ইংল্যান্ড বা পশ্চিমের অন্য কোনো দেশে এ সম্পর্কে কেউ কিছুই জানত না। পূর্বাকাশ থেকে, যে দিগন্ত থেকে সূর্যোদয়ের আলো, প্রাণের স্পন্দন, মৃত্যুর ছায়া আর ঈশ্বরের বিধান নেমে আসে, সেখান থেকে যে মহাবিপর্যয় পৃথিবীকে গ্রাস করেছিল, তার করুণ ইতিহাস বলবার মতো কোনো সাক্ষী তখন অবশিষ্ট ছিল না।


সেই সময়ে সমগ্র ইউরোপের অগণিত মানুষের মধ্যে কেউই হয়তো কখনো শুনেনি সেই সুদূর ক্যাথাই নামের বিশাল রাজ্যের কথা - যেখানে বাস করত শত কোটি হলুদাভ চর্মের মানুষ, যাদের চোখে জমে থাকত হিমেল নিষ্পাপতা। সেই ভূখণ্ডে হাজার হাজার বছর আগেই গড়ে উঠেছিল এক পরিশীলিত সভ্যতা, যখন আমাদের পরিচিত সাম্রাজ্যগুলোর বীজও বপন হয়নি; যখন পাহাড় কেটে তৈরি হয়নি মহানগরী, বন উজাড় করে গড়ে ওঠেনি জনপদ - ছিল কেবল বুনোদের আশ্রয়ে ঢেকে থাকা এক বিস্তীর্ণ, ভীতসন্ত্রস্ত প্রান্তর।


তবু যদি তাদের চোখ খোলা থাকত, যদি তারা দেখতে পেত, তবে নিশ্চয়ই কম্পিত হত সমগ্র ইউরোপ। রাজা থেকে যুবরাজ, পুরোহিত থেকে বণিক, সেনাপতি থেকে নাগরিক, এমনকি নিঃস্ব শ্রমজীবী মানুষ পর্যন্ত - যখন পূর্ব দিক থেকে আসে তার দান, তা কখনো শুধু সৌন্দর্যের নয়; বরং অনেক সময় তা হয়ে ওঠে মৃত্যুর বিভীষিকা।


দেখো সেই ঘন অন্ধকারের পর্দার ওপার থেকে সারা বিশ্বটাকে। তোমার চোখের সামনে উন্মোচিত হবে এক অদ্ভুত নগরী, যেখানে বাড়িগুলো শীতের বরফে প্রায় ঢাকা পড়েছে। করাতের দাঁতের মতো মেঘের ফাঁক দিয়ে উঁকি দেওয়া রক্তিম সূর্যাস্তের আলোয় শহরটা লালচে দেখাচ্ছে। মন্দিরের প্রাঙ্গণ ও উন্মুক্ত স্থানসমূহে প্রজ্বলিত হচ্ছে অতিকায় অগ্নিকুণ্ড, যার জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে সহস্রাধিক মানবদেহ – এক অলৌকিক ও ভয়াবহ দৃশ্য।


সেই নগরীর একচ্ছত্র অধিপতি ছিল মহামারী - এক অজানা প্লেগ। অগণিত মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে, আরও অগণিত প্রাণ এখনও মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করছে। সমগ্র প্রাচ্যভূমি স্তূপীকৃত শবদেহে পরিপূর্ণ - যাদের তারা কখনো ভালোবেসেছিল, কখনো ঘৃণা করেছিল। মৃতদেহ সৎকারের কর্তব্য শেষ করে, মানুষজন দাঁড়িয়েছিল সেই মহান নদীর তীরে, নিঃশব্দে প্রত্যক্ষ করছিল এই মৃত্যুর মহাযজ্ঞ।


মার্ঘ: মৃত্যুদূতের যাত্রা


প্রাচীন সেই অদ্ভুত বাড়িগুলোর মাঝখান দিয়ে বিস্তৃত রাজপথ ধরে একটি শোভাযাত্রা এগিয়ে যাচ্ছিল বাদামী রঙের, বরফের ছোপ ছোপ দাগ থাকা নদীর দিকে। এগিয়ে চলেছে বরফে ছাওয়া বাদামি নদীর দিকে। প্রথমে এগিয়ে চলেছে কালো আলখেল্লা পরা ও কালো কাগজের লণ্ঠন হাতে পুরোহিতদের এক দল, যদিও তখনো সূর্য আলো দিচ্ছিল, লণ্ঠনগুলোও জ্বলছিল। তাদের পিছনে চলেছে শ্বেতবসনধারী পুরোহিতদের আরেক দল, যাদের হাতেও সমভাবে জ্বলছিল সাদা লণ্ঠন। কিন্তু কেউ তাদের দিকে ফিরেও তাকায়নি, না তাদের করুণ শোকগাথার বাণী শুনতে চেয়েছে। কারণ সবার দৃষ্টি স্থির ছিল মাঝখানের একজন ব্যক্তি এবং তার দুই সঙ্গীর উপর।


প্রথম সহচরী ছিলেন এক মোহিনী নারী, যার দেহ ঝলমলে গহনায় সুশোভিত, ছড়ানো কেশরাশিতে কৃত্রিম পুষ্পখচিত। তার উন্মুক্ত বক্ষের নিচে শুভ্র রেশমের বস্ত্র। তিনি ছিলেন প্রাণচাঞ্চল্য ও প্রেমের মূর্ত প্রতীক, নৃত্যরত পদক্ষেপে এগিয়ে চলছিলেন, মায়াবী দৃষ্টিতে চারিদিকে তাকিয়ে ঝুলি থেকে শুষ্ক গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় সহচর ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন, যে পিছনে ধীর পদক্ষেপে চলছিল; অতিশয় রোগা, লিঙ্গহীন যে পুরুষ না মহিলা বোঝা যাচ্ছিল না। শুষ্ক, লৌহ-ধূসর এলোমেলো কেশরাশি, ফ্যাকাসে মুখমণ্ডল, গভীর কোটরাগত চোখ, চর্মাচ্ছাদিত উঁচু কপাল; রোগা পাগুলো ছেঁড়া ন্যাকড়া দিয়ে অর্ধেক ঢাকা, আর নখরসদৃশ হস্ত যা নিরাশায় বাতাসকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছিল। তার রূপ ছিল ভয়ংকর, যেন সমস্ত ভয় নিয়ে মৃত্যু হাজির হয়েছে।


তাদের মাঝখানে নিঃস্পৃহ ভঙ্গিতে হেটে যাচ্ছিলেন একজন মানুষ, শুধু লাল রঙের একটা কোমরবন্ধ আর গলায় বাঁধা একটা লম্বা লাল চাদর ছাড়া তার গায়ে আর কিছু ছিল না, চাদরটা তার চওড়া কাঁধ থেকে নিচে ঝুলছিল। তাকে দেখে মনে হয় না সে বিশেষ কেউ, তীক্ষ্ণ হিমশীতল দৃষ্টির একজন শক্তিশালী হলুদ বর্ণের মানুষ, যার বয়স অনুমান করা দুষ্কর, কারণ লাল চাদরের টেনে-টানা হুড তার চুল ঢেকে রেখেছিল; যৌবনের প্রান্তরেখা থেকে দূরবর্তী বলে প্রতীয়মান হলেও কালের করাল গ্রাসে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ অক্ষত। তিনি অবিচল, একাগ্রভাবে হেঁটে যাচ্ছিলেন, তার মুখমণ্ডল ছিল ভাবলেশহীন, কোনো কিছুতেই ভ্রুক্ষেপ নেই।


মাঝেমাঝেই তিনি সেই দীর্ঘ দৃষ্টি ফেরাতেন সেই জনতার দিকে যারা নতজানু হয়ে গম্ভীর নীরবতায় হাঁটু গেড়ে বসে তাকে পর্যবেক্ষণ করছিল। প্রতিবারই তার দৃষ্টি পতিত হত একক কোনো ব্যক্তির উপর - সে পুরুষ হোক বা নারী কিংবা শিশু—একান্তভাবে সেই একজনকের জন্যই নির্দিষ্ট সেই দৃষ্টি, অপর কারো জন্য নয়। আর যার উপরই সেই দৃষ্টি পতিত হত, সে তৎক্ষণাৎ হাঁটু থেকে উঠে দাঁড়াত, মাথা নত করত, এবং এমন এক উদ্দেশ্যে প্রস্থান করত যেন কোনো অলৌকিক আদেশ প্রাপ্ত হয়েছে।


কালো আলখেল্লা পরা পুরোহিতগণ, শ্বেতবসনধারী পুরোহিতগণ এবং রক্তিম চাদরাবৃত সেই ব্যক্তি সম্মুখে গোলাপের মতো প্রাণবন্ত নারী, পশ্চাতে ছাইরঙা মৃত্যুর প্রতিমূর্তি সকলেই নদীতীরের দিকে অগ্রসর হল।,তারা শ্মশানের অগ্নিশিখার মধ্য দিয়ে পথ করে এগিয়ে গেল, আর রক্তিম সূর্যাস্ত তাদের সবার উপর আলো ছড়াচ্ছিল।


নদীতীরের ঘাটের স্তম্ভগুলিতে দৃঢ়ভাবে বাঁধা ছিল এক অদ্ভুত উঁচু জাহাজ, যার মাস্তুলে টানানো ছিল রক্তিম পাল। শ্বেত ও কালো পোশাকধারী পুরোহিতেরা জাহাজের প্রশস্ত সিঁড়ির দুপাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াল এবং সম্মান প্রদর্শনার্থে মাথা নত করল যখন রক্তিম চাদরাবৃত ব্যক্তি একাকী তাদের মধ্য দিয়ে জাহাজে উঠলেন, কারণ শুষ্ক গোলাপপাপড়ি হাতে থাকা সেই মোহিনী নারী এবং ছাইবর্ণা মৃত্যুরূপী সঙ্গী পিছনে পড়ে গিয়েছিল। সূর্যাস্তের মুহূর্তে, জাহাজের উচ্চ স্টার্নে দাঁড়িয়ে তিনি উচ্চারণ করলেন:


"এখানে আমার কার্য সম্পন্ন হয়েছে। এখন আমি - ভক্ষক অগ্নি, আমি - বার্তাবাহক, পশ্চিমাভিমুখে যাত্রা করব। কিছুকালের জন্য আমি তোমাদের মধ্যে আমার দহনশক্তি স্তব্ধ রাখব; তবু আমাকে স্মরণ রেখো, কারণ আমি আবার ফিরে আসব।"


তার কথা শেষ হতেই জাহাজের দড়িগুলো খুলে দেওয়া হল, বাতাস রক্তিম পালগুলোকে ফুলিয়ে তুলল, আর জাহাজটি রাতের অন্ধকারে বিলীন হয়ে গেল – কালোর বুকে এক রক্তিম বিন্দুর মতো।


জনতা তাকে দেখতে থাকল যতক্ষণ না জাহাজটি দৃষ্টির বাইরে চলে গেল। তারপর তারা একসঙ্গে আনন্দ ও ক্রোধে ফেটে পড়ল। তারা উন্মাদের মতো হাসল। তারা অভিশাপ দিল সেই প্রস্থানকারীকে।


আমরা বেঁচে আছি, বেঁচে আছি, বেঁচে আছি!" তারা চিৎকার করে উঠল।

মুর্গ চলে গেছে! মুর্গ চলে গেছে!

তার পুরোহিতদের হত্যা করো!

তার ছায়াদের বলি দাও।

মুর্গ প্রাচ্যের অভিশাপ নিয়ে পশ্চিমের বুকে বয়ে নিয়ে গেছে।


দেখো, সেটা তাকে অনুসরণ করছে! তারা ধোঁয়া বা বাষ্পের একটি মেঘের দিকে ইঙ্গিত করল, যার মধ্যে ভয়ঙ্কর আকৃতিগুলো অস্পষ্টভাবে নড়াচড়া করছিল, যা প্রস্থানরত রক্তিম-পালের জাহাজের পিছু পিছু যাচ্ছিল।


কালো আলখেল্লাধারী ও সাদা বসন পরিহিত পুরোহিতেরা এই কথা শুনল। কোনো প্রতিবাদ বা অভিযোগ ছাড়াই, যেন এটি কোনো পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠানের অংশ, তারা সারিবদ্ধভাবে তুষারের উপর হাঁটু গেড়ে বসল। কোমর থেকে উর্ধ্বাংশ উন্মুক্ত করে, বিশাল তরবারিধারী জল্লাদরা আবির্ভূত হল। তারা ধীরে, নির্দয়তাহীনভাবে হাঁটু গেড়ে বসা সারিগুলোর দিকে এগিয়ে গেল এবং ধৈর্যশীল প্রসারিত ঘাড়গুলোর উপর ভারী তলোয়ার নামিয়ে তাদের ভয়াবহ কাজ সম্পন্ন করল যতক্ষণ না সবাই মারা গেল।


তারপর তারা ফিরে তাকাল সেই ফুলবাহিনী নারীর সন্ধানে, যে আগে নৃত্য করছিল, আর সেই জীর্ণ বস্ত্রাবৃতার খোঁজে, যে পিছনে অনুসরণ করেছিল, উদ্দেশ্য ছিল তাদের শ্মশানের আগুনে নিক্ষেপ করা। কিন্তু তারা উধাও হয়ে গিয়েছিল, যদিও কেউ তাদের যেতে দেখেনি। শুধু ঘনিয়ে আসা অন্ধকার থেকে কোনো মন্দির বা প্যাগোডার চূড়া থেকে এক করুণ হাওয়ার মতো কণ্ঠস্বর ভেসে এল -


"নির্বোধেরা," সেই কণ্ঠস্বর বিলাপ করে বলল, 

"এখনো তোমাদের সাথে আছে মুর্গ, সৃষ্টির দ্বিতীয় সত্তা;

মুর্গ, যে মানবজাতির সেবক হয়ে এসেছে।

মুর্গ দূত আবার ফিরে আসবে সূর্যাস্তের ওপার থেকে।


তোমরা হত্যা করতে পারো না, ক্ষমা করতে পারো না। যেসব পুরোহিতদের তোমরা হত্যা করেছ বলে ভাবছ, তাদেরই সে দূরদেশে তার সহকারী হিসেবে ডেকেছে।


নির্বোধেরা! তোমরা শুধু মুর্গেরই সেবা করছ—দেবতাদের দ্বাররক্ষী মুর্গের। জীবন ও মৃত্যু তোমাদের হাতে নেই, তার হাতেও নেই। এগুলো শুধু মুর্গের প্রভুর হাতে, যিনি মানবজাতির সাহায্যকারী, সেই প্রভু যাকে কেউ কখনো দেখেনি, কিন্তু যার আদেশ সবাই মেনে চলে - হ্যাঁ, পরাক্রমশালী মুর্গও, যার নামে তোমরা মূর্খের মতো ভয় পেয়েছ।"


অন্ধকার থেকে এই কণ্ঠস্বর ভেসে এল, আর সেই রাতেই মহামারীর তরবারি প্রাচ্যের দেশ থেকে উঠে গেল—আর সেখানে শ্মশানের আগুন আর জলেনি।

-----------------------------------------------------------------------------


ই-মেইল সাবস্ক্রিপশন

Enter your email address:

Delivered by FeedBurner

ক্যাটাগরীসমূহ

পৃষ্ঠাসমূহ

Creative Commons License
This work is licensed under a Creative Commons Attribution 3.0 Unported License.
Protected by Copyscape

ব্লগটি মোট পড়া হয়েছে

বাঙলা ব্লগ. Powered by Blogger.

- Copyright © মেহেদী হাসান-এর বাঙলা ব্লগ | আমার স্বাধীনতা -Metrominimalist- Powered by Blogger - Designed by Mahedi Hasan -