.....



চাকুরী, ব্যবসা ও পেশা।
অন্যের অধীনে কাজ হচ্ছে চাকুরী, নিজের অধীনে কাজ হচ্ছে ব্যবসা, সেবা মূলক কাজ যেমন : ডাক্তার, উকিল ইত্যাদি হচ্ছে পেশা। বাংলাদেশে শিক্ষার প্রেক্ষাপট চাকুরী নির্ভর। তবে অধুনা অনেকেই পেশায় আসছে। আর ব্যবসার কথা শুনলেই তো ভয় লাগে। ছাত্র/ছাত্রীরা ব্যবসা বলতেই বুঝে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ, অনলাইনে বিনিয়োগ ইত্যাদি। এগুলোতে লস গুনতে গুনতে এখন ব্যবসার কথা শুনলেই গায়ে জ্বর চলে আসে।

এখন মূল প্রসঙ্গে আসা যাক। আপনি ছাত্র। চাকুরী, ব্যবসা বা পেশা যেকোন একটি উদ্দেশ্য সামনে রেখে পড়াশোনা করছেন। এখন কথা হচ্ছে আপনার জন্য কি লেখাপড়া চলা অবস্থায় চাকুরী, ব্যবসা বা পেশায় জড়িত হওয়া ঠিক হবে?

আপনি দেখে থাকবেন, বর্তমানে চাকুরীর ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক। এখন একটি ছেলে/মেয়ে মাস্টার্স শেষ করার পর অভিজ্ঞতার অভাবে চাকুরী পায় না। অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হলে তাকে আরো দুই/তিন বছর স্বল্প বেতনে চাকুরী করতে হয়। সে চাকুরীও আবার ঘুষ দিয়ে এবং মামা/খালুর রেফারেন্সে পেয়ে থাকে। ভাবুন, একটি ছেলে মাস্টার্স পাশ করে চার/পাঁচ হাজার টাকা মাসিক বেতনে কাজ করছে, এক্ষেত্রে সে নিজের খরচ চালাবে নাকি পরিবারকে সাপোর্ট করবে? আর এজন্যই পড়ালেখা চলা অবস্থায় চাকুরী করা এমন দোষের কিছু নয়। অবশ্যই এমন চাকুরী যেটা আপনার লেখাপড়ার বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং যাতে আপনার লেখাপড়ায় ব্যাঘাত না ঘটে। দেখা যাবে, আপনি মাস্টার্স/এমবিএ শেষ করার পর আপনার অর্জনের ঝুলিতে জমা হয়েছে ৫/৬ বছরের অভিজ্ঞতা। এক্ষেত্রে যে চাকুরী পাবেন সেই পদবীর আগে “সিনিয়র” শব্দটা বসানোর আশা আপনি করতেই পারেন।

এবার আশা যাক পেশায়। আপনি ডাক্তার, উকিল বা ইঞ্জিনিয়ার হতে যাচ্ছেন। তাহলে এখনই কোন সিনিয়র ডাক্তার, উকিল বা ইঞ্জিনিয়ারের (বিষয় ভিত্তিক) সহকারী হয়ে যান। প্রয়োজনে ছয় মাস বিনা পারিশ্রমিকে খাটুন। তার সাথে থেকে থেকে টেকনিক্যাল কাজগুলো আয়ত্ত্ব করে নিন। যখন লেখাপড়া সম্পন্ন করে ফেলবেন তখন তো আপনি পুরোদস্তুর সিনিয়র হয়ে যাবেন।

ব্যবসা করবেন। আপনাকে ঠিক এই বিষয়ের উপরই লেখাপড়া করতে হবে, ব্যবসার ক্ষেত্রে এমন কোন বাধ্যবাদকতা নেই। আপনি যেকোন লেভেল থেকেই ব্যবসায় জড়িত হতে পারেন। আমরা কমবেশি সকলেই ছোটবেলায় “AIM IN LIFE” নামক ইংরেজী রচনাটি পড়েছি। তাই আপনাকে তখনই নির্ধারন করতে হবে আসলে আপনি কি চান? চাকুরী, ব্যবসা নাকি পেশা? পেশাও একাংশে ব্যবসার মত।

যাই হোক। আপনি ঠিক করেছেন ব্যবসা করবেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কি ব্যবসা করবেন? এক্ষেত্রে আপনার প্রথম কাজ মা, বাবা, বড় ভাই/বোন, আত্মীয় স্বজন, বন্ধু, পরিচিত জনদের সাথে আলাপ করা, ব্যবসার ক্ষেত্রগুলো ঘুরে ঘুরে দেখা - কোনটা লাভজনক এবং ভবিষ্যত উজ্জল। এ রকম কিছু খুঁজে পেলেই ঝাপিয়ে পড়বেন না বরং আলতো ভাবে স্পর্শ করুন মানে শিখতে থাকুন। ব্যবসাটির অতীত-বর্তমান জানুন। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনিয়োগ করুন। এ ব্যবসায় যারা পুরোনো তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলুন। অবাক হয়ে লক্ষ্য করবেন লেখাপড়া শেষ করার সাথে সাথেই আপনি পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছেন। বর্তমানে অনেক তরুন ব্যবসায় উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। সেটা হতে পারে কৃষি খাত, সেবা খাত, খাদ্য খাত, বস্ত্র খাত, কেমিক্যাল, কুটির শিল্প ইত্যাদি।

করার মত করলে আমি বলব প্রতিটি ব্যবসাই লাভজনক। আমি নিজেই ব্যবসা আরম্ভ করেছিলাম ক্ষুদ্র বিনিয়োগের মাধ্যমে। বস্ত্র খাতে। আমি ছোট ছোট স্টক ক্রয় করতাম। এখনও যে করি না তা না। এটা আমার অত্যন্ত প্রিয় একটি ব্যবসা। বস্ত্র এমন একটা জিনিস যেটা পঁচে না, যত্ন নিলে নষ্ট হয় না, আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এর চাহিদা প্রচুর – দেশে এবং বিদেশে। বর্তমানে ফ্রেশ এর চেয়ে স্টকের চাহিদা বেশি কারন স্বল্প মূল্যে কোয়ালিটি প্রেডাক্ট।

Leave a Reply

Subscribe to Posts | Subscribe to Comments

ই-মেইল সাবস্ক্রিপশন

Enter your email address:

Delivered by FeedBurner

ক্যাটাগরীসমূহ

পৃষ্ঠাসমূহ

Creative Commons License
This work is licensed under a Creative Commons Attribution 3.0 Unported License.
Protected by Copyscape

ব্লগটি মোট পড়া হয়েছে

বাঙলা ব্লগ. Powered by Blogger.

- Copyright © মেহেদী হাসান-এর বাঙলা ব্লগ | আমার স্বাধীনতা -Metrominimalist- Powered by Blogger - Designed by Mahedi Hasan -