.....

বর্তমানে মোটামুটি সবাই পড়াশোনা করে থাকে একটি ডিগ্রি নিয়ে চাকরি করবে। আর এভাবে ডিগ্রি পাওয়া চাকরি প্রার্থীর সংখ্যা অসম্ভব হারে বাড়ার ফলে চাকরি হয়ে দাঁড়িয়েছে সোনার হরিণ। কিন্তু এর মধ্যেও অনেকেই আছেন যারা চাকরি নয় বরং করতে চান ব্যবসা। ক্রমে নিজেকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার প্রার্থীর সংখ্যা অনেক কম। আর এ কথা মানতেই হবে উদ্যোক্তার সংখ্যা যত বাড়বে ততই বড় হবে চাকরির বাজার। কেননা এরাই কাজের ক্ষেত্র বড় করে এবং বিভিন্ন পেশাদার নিয়োগ দেয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই উদ্যোক্তা হতে হলে কিভাবে শুরু করতে হবে।
আমাদের দেশে দুইভাবে উদ্যোক্তা সৃষ্টি হয়ে থাকে। প্রথমত ছোট থেকে ব্যবসা শুরু করে ক্রমে কর্পোরেট গ্রুপে রূপ লাভ করা। দ্বিতীয়ত উদ্যোক্তাদের উত্তরসুরী হিসেবে কর্মকান্ড চালিয়ে যাওয়া। এ পর্যায়ে যারা পারিবারিক সূত্রে বড় বিজনেসের ভার পান তারা মেধা এবং কৌশলের উপর নির্ভর করে সেটি বড় হতে এবং পরিচালনা করতে থাকে। পক্ষান্তরে যারা শূন্য থেকে শুরু করে ক্রমে বিশাল উদ্যোক্তায় পরিণত হন তাদের থাকে কর্মজীবনে বর্ণাঢ্য অভিজ্ঞতা। আমাদের আজকের আলোচনার প্রসঙ্গ নতুন এই উদ্যোক্তা সৃষ্টি নিয়ে।

একুশ শতকের এই সময়ে ব্যবসায় সম্পৃক্ত হয়ে সফলতা আনয়নের জন্য বেশ কতগুলো বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েই শুরু করতে হবে বিজনেস কর্মকান্ড। এ জন্যে প্রথমেই থাকতে হবে শিক্ষা। একই সাথে দেশ বিদেশের বিভিন্ন বিজনেস প্রসঙ্গে ধারণা থাকা প্রয়োজন। কেননা এখন ব্যবসার গন্ডি শুধু দেশ নয়, পুরো বিশ্বই এর সীমারেখা।
এরপর উদ্যোক্তা হতে হলে কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে। তিল তিল করে গড়ে তোলা বিজনেস এক সময় বিশাল শিল্প সম্রাজ্য করে সাজাতে পরিশ্রমের বিকল্প নেই। এরপর আপনাকে হতে হবে ডায়নামিক এবং চৌকস। কেননা উদ্যোক্তা হতে আপনাকে পিওন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় প্রধানের সাথে পর্যন্ত কথা বলতে হবে। সর্বোপরি আপনাকে হতে হবে হিসেবী। বিজনেসের প্রতিটা পর্বে নিখুঁত হিসেবী হয়ে গড়ে তুলতে হবে শিল্প কারখানা।

আপনারা পড়ছেন, উদ্যোক্তা হতে হলে কি করবেন?

এরপর আসতে হবে বিজনেস প্ল্যানে। মানসিকভাবে সক্ষম হবার পর উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে বিজনেসের ক্ষেত্র নির্বাচন করতে হবে। কোন ব্যবসা আপনি ভাল বুঝেন এবং কোন ব্যবসার সম্ভাবনা ভাল। মনে রাখতে হবে উদ্যোক্তা হতে হলে একটি শিল্প করার পরিকল্পনা নিতে হবে। শিল্প সেটি ক্ষুদ্রও হতে পারে আবার মাঝারিও হতে পারে। আবার যদি আপনার মেধা এবং পুঁজিতে কুলিয়ে ওঠে তবে গড়তে পারেন- বৃহৎ শিল্প কারখানা। সবার আগে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে চাহিদা যোগানের বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে সমন্বয় করতে হবে। মনে রাখতে হবে সফল উদ্যোক্তা হতে হলে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। আপনি যে প্রডাক্ট বা সার্ভিসের সাথে জড়িত হবেন তা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নিয়ে এই প্রডাক্টটি জনপ্রিয় করতে এবং গ্রাহকের কাছে আস্থা অর্জন করতে আপনার একান্ত কিছু বিসর্জন দিয়ে হলেও কাজ করে যেতে হবে একাগ্র চিত্তে।

আপনার শুধু বিজনেস আইডিয়া থাকলেই হবে না সেটি প্রয়োগ এবং বাস্তবায়নের ক্ষমতা থাকতে হবে। বিভিন্ন বাধা, বিভিন্ন নেতিবাচক অবস্থা থেকে শিক্ষা নিয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে ব্যবসা শুরু করতে হবে। আর কাজে যে নিষ্ঠ এবং ব্যবহারে যে মার্জিত সে শৃংখলা নিয়ে কর্মকান্ড চালিয়ে গেলে ব্যবসায় সাফল্য আসবেই। তবে এ পর্যায়ে পরিবারের সবার সম্মতি থাকা উচিত। কেননা, একার পক্ষে আপনার সফলভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হতে পারে। সেক্ষেত্রে পরিবারের অন্যান্য সদস্য আপনাকে সহায়তা করবে।

প্রাথমিক পুঁজি নিয়ে কোম্পানির একটি নাম সিলেক্ট করে ফেলুন। এরপর সেটি রেজিস্ট্রি করে প্রয়োজনে সিটি কর্পোরেশনের আওতায় ব্যবসা হলে ট্রেন্ড লাইসেন্স করে নিন। এরপর প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ করুন। ব্যবসার একটি ঠিকানা ব্যবহার করতে হবে এবং কারখানা প্রয়োজন পড়লে সেটিও স্থাপন করতে হবে। আপনার কোম্পানি যদি একক যৌথ বা বিদেশী বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট হয়ে থাকে তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ড সহায়তা করতে পারে। তবে একই নামের একই ধরনের কোম্পানি যেনো না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। জয়েন স্টক থেকে কোম্পানি রেজিস্ট্রি করলে এধরনের ভুল হবার কথা নয়। আপনার উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে যাবার আগে বাজার জরিপে যাওয়া উচিত। একই ধরনের পণ্যের মান ও প্রাইজ কেমন সে সম্পর্কে চিন্তা করে ভাল মানের পণ্য অপেক্ষাকৃত কমদামে দেওয়ার চিন্তা করতে হবে। এরপর আসে বিজনেস ইন্সুরেন্স, ব্যাংক একাউন্ট, সেলস এরিয়া এবং গ্রাহক শ্রেণী সম্পর্কে। প্রডাক্টের মান যাচাইয়ের জন্যে বিএসটি আই’র সীল ও নম্বর নেওয়া উচিত। যদি সেবা কার্যক্রম হয় এসব কিছু ক্ষেত্রে সরকারের কয়েকটি অধিদপ্তরের ছাড়পত্র লাগে। যদি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য হয় তবে এটি আমদানি রপ্তানি এলসি, লজিস্টিক সাপোর্ট, ব্যাংকিং সাপোর্ট এবং সর্বোপরি মার্কেটিংয়ে সময়োপযোগী ম্যাকানিজম ব্যবহার করতে হবে। পণ্যের অভ্যন্তরীণ বাজার জনপ্রিয় করতে প্রচারণার বিষয়েও ভাবতে হবে।

আপনারা পড়ছেন, উদ্যোক্তা হতে হলে কি করবেন?

এসব বিষয়ে সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়েবসাইট দেওয়া হলো-www.boi.gov.bd, www.bangladesh.gov.bd, www.roc.gov.bd, www.dhakacity.org

তথ্যসূত্র : ওয়েবসাইট থেকে

Leave a Reply

Subscribe to Posts | Subscribe to Comments

ই-মেইল সাবস্ক্রিপশন

Enter your email address:

Delivered by FeedBurner

ক্যাটাগরীসমূহ

পৃষ্ঠাসমূহ

Creative Commons License
This work is licensed under a Creative Commons Attribution 3.0 Unported License.
Protected by Copyscape

ব্লগটি মোট পড়া হয়েছে

বাঙলা ব্লগ. Powered by Blogger.

- Copyright © মেহেদী হাসান-এর বাঙলা ব্লগ | আমার স্বাধীনতা -Metrominimalist- Powered by Blogger - Designed by Mahedi Hasan -