.....

Archive for August 2013

প্রিমিয়াম পোষ্ট : এস.ই.ও রিসোর্স ডাউনলোড করুন বিনামূল্যে


এই পোষ্টটি নিযমিত আপডেট করা হয়।
তাই সাথেই থাকুন।।
একে আপনি বুকমার্ক করে রাখতে পারেন।।।

আমরা যারা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের (এস.ই.ও) কাজ করি তারা জানি রিসোর্সের কত মূল্য। আমাদের কাছে এক একটি রিসোর্স অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম অনেকগুলো রিসোর্স। যেখানে আপনারা পাবেন ফোরাম লিস্ট, স্যোসাল বুকমার্ক, ব্লগ, এডু/গভ লিস্ট, প্রোফাইল সাইট ইত্যাদি। নিচে ক্রম অনুসারে ডাউনলোডিং লিংক প্রদান করা হল।

১. ১২০ টি সিগনেচার সাপোর্ট করে এমন ফোরাম লিস্ট - ডাউনলোড
২. ডু-ফলো ব্লগ লিস্ট - ডাউনলোড
৩. ফেসবুক পেজ লাইক সংগ্রহ করার সাইট লিস্ট - ডাউনলোড
৪. সিগনেচার সাপোর্ট করে এমন ডু-ফলো ফোরাম লিস্ট - ডাউনলোড
৫. এসইও ফ্রেন্ডলি ডিরেক্টরী সাইট লিস্ট - ডাউনলোড
৬. ৯১৩ এসইও ফ্রেন্ডলি ডিরেক্টরী - ডাউনলোড
৭.  ৩৬২ এসইও ফ্রেন্ডলি ডিরেক্টরী সাইট লিস্ট - ডাউনলোড
৮. স্ক্যাটাল সাইট লিস্ট* - ডাউনলোড
৯. রিপোর্ট: ৪৭০০ ফ্রি ব্যাকলিঙ্ক - ডাউনলোড
১০.  রিপোর্ট: ৫০৩+ ডিরেক্টরী সাবমিশন - ডাউনলোড
১১. প্লিগ সাইট লিস্ট* - ডাউনলোড
১২. অটো এপ্রুভ ডু-ফলো ব্লগ লিস্ট - ডাউনলোড
১৩. এডু সাইট কালেকশন - ডাউনলোড
১৪. এডু ব্যাকলিঙ্ক লিস্ট - ডাউনলোড
১৫. এস.ই.ও টুলের বিশাল লিস্ট - ডাউনলোড
১৬. উচ্চ পেজ র‌্যাঙ্ক ডিরেক্টরী লিস্ট - ডাউনলোড  
১৭.  উচ্চ পেজ র‌্যাঙ্ক ডিরেক্টরী লিস্ট ২ - ডাউনলোড
১৮. অনেকগুলো ডিরেক্টরী লিস্ট এক্সেল সিটে - ডাউনলোড
১৯. ডু-ফলো সোস্যাল বুকমার্কিং সাইট লিস্ট - ডাউনলোড
২০. ডু-ফলো ফোরাম কালেকশন - ডাউনলোড
২১. ৪০০ সোস্যাল বুকমার্কিং সাইট লিস্ট - ডাউনলোড
২২. ২৫০ প্রেস রিলিস সাইট লিস্ট - ডাউনলোড
২৩. ২১৬ প্রোফাইল লিংক সাইট লিস্ট - ডাউনলোড
২৪. ২০০ উচ্চ পেজ র‌্যাঙ্ক ফোরাম লিস্ট - ডাউনলোড
২৫. ৬৯৩ ডু-ফলো ব্লগ লিস্ট - ডাউনলোড
২৬. ৬০০ ফ্রি ক্লাসিফায়েড সাইট লিস্ট - ডাউনলোড
২৭. ৪৫৯ সোস্যাল বুকমার্কিং সাইট লিস্ট - ডাউনলোড
২৮. ৪২৭ এডু গেস্টবুক লিস্ট - ডাউনলোড
২৯. ১৫ সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট (পেজ র‌্যাঙ্ক ও এ্যালেক্সা সহ) - ডাউনলোড
৩০. অটো এপ্রুভ ডু-ফলো লিস্ট - ডাউনলোড
৩১. আর্টিকেল সাবমিশন সাইট লিস্ট - ডাউনলোড
৩২. ৬০০০ পিএইচপি সাপোর্টেড ডিরেক্টরী লিস্ট - ডাউনলোড
৩৩. ৪০০০ অটো এপ্রুভ ডু-ফলো ব্লগ - ডাউনলোড
৩৪. ১৪৬০ এডু ব্লগ লিস্ট - ডাউনলোড
৩৫. ৮৫০ সোস্যাল বুকমার্কিং সাইট লিস্ট - ডাউনলোড
৩৬. বিজনেস টু বিজনেস সাইট লিস্ট - ডাউনলোড
৩৭. ব্যাকলিঙ্ক - ডাউনলোড
৩৮. ৬৪ নতুন প্লিগ লিস্ট - ডাউনলোড




*স্ক্যাটাল সাইট : যে সকল সাইট স্ক্যাটাল নামক ওপেন সোর্স স্যোসাল বুকমার্কিং স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করে তাদের স্ক্যাটাল সাইট বলে। স্ক্যাটাল স্ক্রিপ্ট সহজভাবে ডাউনলোড করা যায়, এবং এটা ব্যবহারকারীকে তার নিজস্ব স্যোসাল বুকমার্কিং সাইট তৈরীতে সহায়তা করে। স্ক্রিপ্ট ডাউনলোড করা যাবে এখান থেকে।

* প্লিগ সাইট : প্লিগ হচ্ছে স্যোসাল পাবলিশিং কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। বিস্তারিত এখান থেকে জানতে পারবেন।

প্রিমিয়াম পোষ্ট : এই.ই.ও রিসোর্স ডাউনলোড করুন বিনামূল্যে Last Reviewed by মেহেদী হাসান on August 20 2013 Rating: 5

চার কোটিপতি চাষির গল্প


লেখক:আমিনুল ইসলাম জুয়েল
গাছে ফল, মাঠে সবজিন্ধ এই নিয়ে ঈশ্বরদী। মাঠের পর মাঠ শুধু সবজি আর সবজি। গ্রামের পর গ্রাম চোখে পড়বে বিভিন্ন রকম ফলবাগান। এখানকার এমন কোনো বাড়ি নেই, যার চার পাশের পতিত জায়গায় কোনো সবজি কিংবা ফলের চাষ করা হয়নি। শুধু পাবনা জেলা নয়, দেশের বিভিন্ন জেলায় এখানকার সবজির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। বহু শিক্ষিত যুবক সবজি চাষে নেমে স্বনির্ভর হয়েছেন। এমন সবজি ও ফল বিপ্লবের পেছনে ঈশ্বরদীর চার দিকে চারজন পরিশ্রমী ও অগ্রণী চাষির অবদান রয়েছে। তারা নিজেরা হয়েছেন সফল ও কোটিপতি, অন্য দিকে তৈরি করেছেন আরো অনেক সফল চাষি।

কলেজ পালানো ছেলে কোটিপতি লিচুচাষি ১৯৮৩ সাল। ঈশ্বরদীর মিরকামারি গ্রামের অবস্খাপন্ন চাষি তোরাব মণ্ডল ছেলে আবদুল জলিল কিতাবকে পড়াশোনার জন্য রাজশাহী কলেজে ভর্তি করিয়েছিলেন। কিন্তু ছেলে পড়াশোনা বাদ দিয়ে কলেজ ছেড়ে পালালেন। বাড়ি এসে শুরু করলেন লিচুচাষ। ছেলের এমন পাগলামি দেখে বাবা খুব ক্ষুব্ধ হলেন। ছেলে লেখাপড়া করে চাকরি করবে, তা না করে শুরু করল লিচু বাগান। বাবা ধরে নিলেন এ ছেলে দিয়ে আর কিছু হবে না। কিন্তু কী অবাক ব্যাপার, বাবার সব আশঙ্কা ভুল প্রমাণ করে ছেলে এখন দেশখ্যাত লিচুচাষি।
শুরু করেছিলেন এক বিঘা জমিতে ১০টি চারা লাগিয়ে। কিন্তু ১৯৯০ সালের মধ্যে ৫০ বিঘা জমিতে লিচু বাগান করে সবাইকে অবাক করে দেন। কিতাব মণ্ডল এ বছর পর্যন্ত ৬৫ বিঘা জমিতে লিচু বাগান করেছেন। তিনি জানালেন, ঈশ্বরদীতে তার বাগানেই সবচেয়ে বেশি জাতের লিচু রয়েছে। খরচ বাদ দিয়ে প্রায় এক কোটি টাকার লিচু বিক্রি হবে বলে আশা করছেন।
বাগান পরিচর্যায় ২২ জন শ্রমিক কাজ করে। পরিচর্যা খরচের বেশ কিছুটা উঠে আসে বাগানে সাথী ফসল হিসেবে চাষ করা হলুদের মাধ্যমে। ১৫ বিঘায় চাষ হয়েছে আপেল কুল ও বাউকুল।
লিচু নিয়ে কোনো গবেষণা নেই। লিচুর পরিচর্যার জন্য কোনো আলাদা ওষুধ বাজারে পাওয়া যায় না। কিতাব বললেন, যে পরিমাণ লিচু নষ্ট হয় তা থেকে অনায়াসে অ্যালকোহল উৎপাদন সম্ভব। বাইরে থেকে স্পিরিট আমদানির প্রয়োজনও পড়বে না। এ জন্য সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন। এ ছাড়া লিচু গাছ থেকে উত্তোলনের সাথে সাথে বাজারজাত করা হয়। উন্নত সংরক্ষণ ব্যবস্খা থাকলে দু-তিন মাস ধরে লিচু বাজারজাত করা যেত। এতে চাষি-ভোক্তা উভয়েই লাভবান হতেন।

ধনিয়া চাষে ধনী ময়েজ অপ্রধান মসলা ধনিয়া পাতার চাষ করেও দারিদ্র্য বিমোচন করা সম্ভব। তবে ধনিয়া পাতার জাতটি হতে হবে হাইব্রিড আর চাষ করতে হবে আগাম। তাহলেই বাজিমাত! যেমন করেছেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বড়ই চড়া গ্রামের চাষি সিদ্দিকুর রহমান ময়েজ। তিনি আগাম হাইব্রিড জাতের ধনিয়া পাতা চাষ করেই ভূমিহীন থেকে কোটিপতি। হাইব্রিড ধনিয়ার পাশাপাশি তিনি অন্যান্য মসলা ও সবজি চাষ করেন। মাত্র মাধ্যমিক পাস এ চাষি ঈশ্বরদীর এক সফল ও মডেল চাষি। ধনিয়া চাষ কেমন লাভজনকন্ধ এমন প্রশ্নে তিনি জানান, প্রতি বিঘায় ২০ থেকে ২৫ মণ ফলন পাওয়া যায়। প্রতি মণ পাতা গড়ে চার-পাঁচ হাজার টাকা বিক্রি হয়। ধনিয়া আবাদের জন্য সাধারণ চাষিরা যখন ক্ষেতে চাষ শুরু করে তার অন্তত পাঁচ থেকে ছয় মাস আগে একজন সবজি চাষি হিসেবে তিনি ধনিয়া পাতার জন্য চাষ শুরু করেন। একই জমিতে দুই-তিন দফা ধনিয়ার আবাদ হয়। গাছের বয়স দুই মাস হলেই বিক্রি করে দেয়া হয়। খরচ যায় জমির লিজমানিসহ প্রায় ছয় থেকে সাত হাজার টাকা।
ধনিয়া পাতার আবাদে অভাবনীয় সাফল্যের পর চাষি ময়েজ অন্যান্য সবজি ও ফল চাষেও এগিয়ে এসেছেন। এর মধ্যে কুল, গাঁজর, পেঁপে, চিচিংগা, বারোমাসী পিঁয়াজ উল্লেখযোগ্য। ২০০৪ সালে ৪১ বিঘাতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ করে তিন লাখ টাকা লাভ করেন। ২০০৬ সালে ৮০ বিঘা জমিতে এক বিরাট কুল বাগান গড়ে তোলেন। ২০০৭ সালে কুল বিক্রি করে এক কোটি ১৫ লাখ টাকা আয় করেন। এ বছর তার গাজর চাষে ১০ লাখ টাকা লাভ হয়। ২০০৮ সালে কুল চাষে তার ৯৫ লাখ টাকা আয় হয়েছিল। ২০০৯ সালে ১০০ বিঘাতে কুল চাষ করেন। দাম পড়ে যাওয়ায় লোকসান হয়েছে। পেয়ারা বাগান করেছেন ২০ বিঘাতে। সবে পেয়ারা উঠতে শুরু হয়েছে।

গরুর ব্যাপারী এখন গাজর বাদশা সাত থেকে আট বছর আগে লোকে তাকে চিনত গরুর দালাল হিসেবে। বিত্ত-বৈভব ছিল না, ছিল না সামাজিক মর্যাদা। থাকার মধ্যে ‘শুধু বিঘে দুই ভুঁই ছিল’ তার। সেই দুই বিঘা জমি আজ জায়দুলকে গরুর ব্যাপারীর পরিচিতি মুছে করেছে গাজর বাদশা। ঈশ্বরদী উপজেলার ভাড়ইমারী গ্রামের ছাত্তারের ছেলে জায়দুল ইসলাম এখন দেশের অন্যতম প্রধান গাজর চাষি। জায়দুল জানান, লেখাপড়া না জানায় চাকরি বা অন্য ব্যবসায় যেতে না পারায় গরুর ব্যবসা ধরি। লোকে এ ব্যবসাকে বাঁকা চোখে দেখত। তারও খুব ভালো লাগেনি সে ব্যবসা। এরকম সময়ে এলাকার কৃষি কর্মী আব্দুল খালেক তাকে সবজি চাষের পরামর্শ দেন। জায়দুল ছেড়ে দেন গরুর ব্যবসা। কোমর বেঁধে নামেন সবজি চাষে। দুই বিঘা জমিতে গাজর চাষ করে প্রথম ৫০ হাজার টাকা মুনাফা পান। পাঁচ বছরের মাথায় ৩০ বিঘা জমিতে গাজর চাষ করেন। এখন তিনি চল্লিশ বিঘা জমিতে গাজর চাষ করেন। এই আট বছরের মাথায় তার নিজস্ব সম্পত্তির পরিমাণ ২৫ বিঘা। গাজর চাষাবাদ ও বিপণন সম্বধে জায়দুল আমাদের জানান, একই ক্ষেতে দুই দফায় গাজর আবাদ করা হয়। প্রথম ধাপে ভাদ্র মাসের প্রথম সপ্তাহে ক্ষেতে বীজ বোনা হয়। এই গাজর আগাম সবজি হিসেবে চড়া দামে (প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে) বিক্রি করা হয়। প্রথম দফায় গাজর তোলার পর দ্বিতীয় দফায় গাজর বোনা হয়। এই শেষের বার যখন গাজর তোলা হয় তত দিনে গাজরের বাজার নেমে যায়। এ জন্য গাজর কোল্ড স্টোরেজে রেখে দেন। জায়দুল জানান, প্রতি বিঘায় ৫০ থেকে ১২০ মণ ফলন পাওয়া যায়। বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা মুনাফা থাকে।

পেঁপের রাজা বাদশা মিয়া ছাত্রজীবন থেকেই শাকসবজি আলু, টমেটো, গাজর, বেগুন ইত্যাদির চাষ করতেন। আজ শাহজাহান আলী ওরফে বাদশা মিয়ার নিজস্ব ৪০ বিঘা জমির ওপর শুধুই পেঁপের বাগান।
বাদশা মিয়া জানালেন, ৭৭ সালে বেগুন চাষে সাফল্য অর্জন করি। এক বিঘা জমিতে ৩৩ হাজার টাকা মুনাফা অর্জন করেছিলাম। মূলত তখন থেকেই সবজি চাষ পেশা হিসেবে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিই। ৮৮-৮৯ সালে ধনিয়ার জমি লিজ নিয়ে ৮০ বিঘা জমিতে শাকসবজি উৎপাদন করি। এতে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯১ সালে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার লাভ করি। ১৯৯৭-৯৮ সালে বঙ্গবìধু কৃষি পদক লাভ করি। এখন ৮২ একর জমির ওপর গড়ে তুলেছেন মা-মনি কৃষি খামার। যেখানে প্রায় ৩৫ প্রকার সবজি ও ছয় থেকে সাত জাতের ফল চাষ হচ্ছে। গড়ে তুলেছেন একটি ডেয়ারি ফার্ম। দেশের মধ্যে তিনিই প্রথম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শরিফা বাগান করছেন। তার খামারে সব মিলিয়ে ৫০ থেকে ৬০ জন লোকের কর্মসংস্খান হয়েছে। বাদশা মিয়া আমাদের জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, বারি, বিনা, বিএডিসি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় তিনি খামার পরিচালনায় সাফল্য লাভ করেছেন।


সূত্র :এগ্রোবাংলা

কেঁচো চাষে লাখপতি


স্ত্রীকে নিয়ে কেঁচো পরিচর্যায় ব্যস্ত আবদুল করিম। মেহেরপুরের এই কৃষক কেঁচো চাষের মাধ্যমে তৈরি করেছেন কৃষিবান্ধব পরিবেশ
ছবি: প্রথম আলো

কেঁচোর মধ্যে গা-ঘিনঘিন ভাব যতই থাকুক, প্রাণীটি কৃষকের পরম বন্ধু। মাটির উর্বরা শক্তি বাড়াতে প্রাকৃতিক লাঙল হিসেবে কাজ করে কেঁচো। মাটির জৈব সার তৈরিতেও এর জুড়ি নেই। একটা সময় ছিল, যখন মাটি খুঁড়লেই কেঁচো বের হতো। বর্ষাকালে যেখানে-সেখানে কিলবিল করত এগুলো। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে এখন জমির উর্বরা শক্তি যেমন কমেছে, কেঁচোও কমেছে অনেক। এর কুফল ভোগ করছেন কৃষকেরা। এসব কৃষককে কেঁচো সরবরাহ করে জমির উর্বরতা শক্তি বাড়াতে সহায়তা করছেন মেহেরপুরের ভূমিহীন চাষি আবদুুল করিম (৫৫)। একই সঙ্গে কেঁচো চাষকে তিনি একটি লাভজনক কৃষিবান্ধব ব্যবসায় নিয়ে গেছেন।

যেভাবে শুরু: ২০০০ সালের বন্যার সময় মেহেরপুর সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রাম ছেড়ে ভূমিহীনদের জন্য গড়া আমঝুপি ইউনিয়নের রঘুনাথপুর আশ্রয়ণে আশ্রয় নেন করিম। সেখানে অন্যের এক বিঘা জমি ইজারা নিয়ে তিনি চাষাবাদ শুরু করেন। একই সঙ্গে শ্রম বিক্রি করেও জীবিকা চালাতেন। ২০০৭ সাল পর্যন্ত করিম ২০ হাজার টাকা জমান। তাঁর ইচ্ছা ছিল, ওই টাকা দিয়ে আরও দুই বিঘা জমি ইজারা নেবেন। কিন্তু সে বছর সার ও বীজের তীব্র সংকট দেখা দেয়। তখন মেহেরপুর সদর উপজেলার কৃষি কার্যালয়ের ব্লক সুপারভাইজার আশরাফুল ইসলাম তাঁকে লালা (লাল) জাতের কেঁচো সংগ্রহ করে তা গোবরে চাষ করে জৈব সার তৈরির পরামর্শ দেন।

পরামর্শ মনে ধরে করিমের। শুরু হয় তাঁর কেঁচো খোঁজা। একই বছর অক্টোবরে তিনি ভারতের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর থানার শান্তিপুরের বাসিন্দা প্রদীপের বাড়ি যান। সেখানে ২০ দিন থেকে তিনি কেঁচো চাষের ওপর প্রশিক্ষণ নেন। এ সময় এলাকায় ঘুরে তিনি দেখেন, অধিকাংশ বাড়িতে কেঁচো দিয়ে জৈব সার তৈরি করা হচ্ছে। এ সার ব্যবহারের গুণে আশাব্যঞ্জক ফল পাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের কৃষকেরা।

প্রশিক্ষণ শেষে পাঁচ হাজার টাকায় ২০ হাজার কেঁচো কিনে দেশে ফেরেন করিম। কেঁচোর প্রজনন ও জৈব সার তৈরির জন্য তিনি ১২ হাজার টাকায় একটি গাভি কেনেন। শুরু হয় তাঁর গোবরে কেঁচো চাষ করে সার তৈরি। এসব কেঁচো দেখতে লাল। গোবর খেয়ে এগুলো যে মল ছাড়ে, এটিই জৈব সার। দেখতে চায়ের দানার মতো লালচে কালো। প্রথমে ইজারা নেওয়া জমিতে এ সার ব্যবহার করে কাঙ্ক্ষিত ফল পান করিম। তাঁর জমিতে বাড়তি ফলন দেখে আশপাশের চাষিরা এ ব্যাপারে উত্সাহী হন। তাঁরা এসে কেঁচো ও সারের জন্য ধরনা দেন করিমের কাছে। এতে তাঁর আয়ের পথ সুগম হয়।
সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে: নিজের গরু থাকায় কেঁচো চাষ ও সার উত্পাদনে করিমের কোনো ব্যয় নেই। শীতকাল ছাড়া সারা বছরই কেঁচোর বাচ্চা হয়। আর এগুলোর বংশবিস্তারও খুব দ্রুত ঘটে। এ কারণে মাত্র দুই বছরে করিমের ২০ হাজার কেঁচো পাঁচ লাখে পৌঁছে।

প্রতিটি কেঁচো তিন টাকা দরে তাঁর পাঁচ লাখ কেঁচোর দাম এখন ১৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে এক লাখ কেঁচো তিনি তিন লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। সার বিক্রি করে পেয়েছেন প্রায় এক লাখ টাকা। এই টাকা দিয়ে তিনি পাঁচটি গরু কিনেছেন এবং চাষাবাদের জন্য ইজারা নিয়েছেন ২০ বিঘা জমি। স্ত্রী ও সন্তানেরা এসব কাজে তাঁকে সহযোগিতা করছে।
করিম বলেন, ‘যে গরুতে দুধ দেয়, তার লাথিও ভালো। তাই সারা দিন কেঁচো নাড়াচাড়া করতে খারাপ লাগে না। মনে হয় যেন টাকা নাড়াচাড়া করছি।’

উপকার পেলেন যাঁরা: করিমের জৈব সার ব্যবহারকারী আমঝুপি ইউনিয়নের চাষি আলামিন হোসেন, জাহিদুর ইসলাম, শাহজাহান আলী, কাওসার আলী ও আশরাফুল ইসলাম বলেন, তাঁরা এখন জমিতে রাসায়নিক সারের বদলে করিমের উত্পাদিত জৈব সার ব্যবহার করছেন। এতে তাঁদের উত্পাদন ব্যয় যেমন কমেছে, তেমনি জমির উর্বরতা শক্তি বেড়ে ফসলের পুষ্টিমানও বহু গুণ বেড়েছে।
আমঝুপি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন বলেন, করিমের জৈব সার এ অঞ্চলের মাটি ও কৃষককে বাঁচিয়েছে।

মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জাহিদুল আমিন বলেন, আদর্শ মাটিতে পাঁচ ভাগ জৈব উপাদান থাকে। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে মেহেরপুরের মাটিতে এখন জৈব উপাদান আছে মাত্র এক ভাগ। গোবরে চাষ করা করিমের কেঁচো-সারে জৈব উপাদান আছে ৩০ ভাগ। আবার এই সারে মাটির আরও ১০ ধরনের উপাদান থাকায় ফসল বাড়ার সঙ্গে এর পুষ্টিমানও বাড়ছে। এ সার ব্যবহারে মাটির উর্বরতা শক্তিও বাড়ছে বহু গুণ। তিনি আরও বলেন, আমঝুপি ইউপির সহায়তায় মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি সম্প্র্রসারণ বিভাগ প্রতিটি ওয়ার্ডে করিমের মতো কেঁচো-সার উত্পাদনের ভাটি (বেড) তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। দেশের কয়েক জেলায় আবর্জনা পচিয়ে কেঁচো-সার তৈরি করা হলেও একমাত্র করিম গোবরে কেঁচো চাষ করে উত্কৃষ্টমানের জৈব সার তৈরি করছেন, যা একটি অনুকরণীয় উদাহরণ।


তথ্যসূত্র: দৈনিক প্রথম আলো

সবজি চাষে ভাগ্য বদল



প্রতিবেদক: ইজাজ আহ্মেদ মিলন, গাজীপুর 
সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা
দেশ মাতারই মুক্তিকামী দেশের সে যে আশা।”
হ্যাঁ, সব সাধকের চেয়ে বড় সাধক হলেন আমার দেশের কৃষক। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে যে কৃষক শরীরের ঘাম ঝরিয়ে উৎপাদন করেন সোনার ফসল। পুরো জাতি তাকিয়ে থাকে ওই কৃষকের দিকে, যে কৃষকের কারণে অর্থনৈতিক মুক্তি আসে নিজের, পরিবারের এবং সমাজের। ফলে বদলে যায় একটি জনপদ, উৎসাহিত হয় আশেপাশের অগণিত মানুষ। এমনই একজন কৃষকের নাম মোঃ খাইরুল ইসলাম। যিনি শাক-সবজি চাষাবাদ, মুরগি আর মাছের খামার করে বছরে আয় করছেন ১২/১৪ লাখ টাকা। নিজে বদলে যাওয়ার পাশাপাশি পরিবারে এনেছেন সুখের হাসি।

কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের খাইরুল ইসলাম ২০০৩ সালে এইচএসসি পাশ করার পর ডিগ্রিতে ভর্তি হয়ে পড়াশুনার পাশাপাশি ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি নেন। কিন্তু পরাধীন ওই চাকরিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে না পেরে বাড়িতে ফিরে মাত্র ৫ হাজার টাকা মূলধন নিয়ে সাড়ে ৩ বিঘা পৈত্রিক জমিতে শুরু করেন পেঁপে চাষ। ছোটবেলা থেকেই কৃষি কাজের প্রতি খাইরুলের ছিল প্রচণ্ড রকম দুর্বলতা। কঠোর পরিশ্রম আর দক্ষতার কারণেই প্রথমবার পেঁপে চাষে খাইরুল দেখেন সফলতার মুখ। সব খরচ বাদে তার লাভ হয় প্রায় ১ লাখ টাকা। পরের বছর অন্যের জমি লিজ নিয়ে ব্যাপকভাবে শুরু করেন পেঁপে চাষ। সাথী ফসল হিসেবে নানা জাতের শাক-সবজি চাষ করেন। লাভ হয় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি। লাউ, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাল শাক, পালং শাক ইত্যাদি ফসল ফলিয়ে খাইরুল আনেন অর্থনৈতিক সচ্ছলতা। তার উৎসাহে এলাকার অন্য বেকার যুবকরাও ঝুঁকতে থাকেন শাক-সবজি চাষে। ইতিমধ্যে খাইরুল গড়ে তোলেন ব্রয়লার মুরগি এবং মাছের খামার। মাত্র ৫শ’ বাচ্চা নিয়ে তার পোল্ট্রি খামারের যাত্রা শুরু। বর্তমানে প্রায় ৫ হাজার মুরগি রয়েছে খামারে। এক বিঘা জলাশয়ে মাছের খামার শুরু হলেও সেটা সম্প্রসারিত হয়ে বর্তমানে প্রায় ১৫ বিঘায় দাঁড়িয়েছে। তাছাড়াও খাইরুল আখ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। সব মিলিয়ে এই কৃষকের সকল প্রকার খরচ বাদে বার্ষিক আয় দাঁড়িয়েছে ১২/১৪ লাখ টাকা। খাইরুলের বাগান ও খামারে ১০/১২ জন দিনমজুর কাজ করে মেটাচ্ছেন তাদের পরিবারের চাহিদা।

এলাকার বেকার যুবক ও তার সমবয়সীদের কৃষি কাজে আত্মনিয়োগ করার জন্য খাইরুল উৎসাহিত করেন নিয়মিত। আদর্শ একজন কৃষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চান তিনি। দেশের বেকার যুবকদের যদি সরকার সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে কৃষি কাজে উৎসাহিত করেন তাহলে অসংখ্য বেকার যুবক নিজের ভাগ্য বদলাতে পারবে বলে মনে করেন সফল সবজি চাষি খাইরুল ইসলাম।

তথ্যসূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক

খেতে হাঁস-মাছ, আইলে গাছ চাষ করে স্বাবলম্বী সোলায়মান


লেখক: রহিদুল মিয়া, তারাগঞ্জ (রংপুর)
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার নিচু প্রত্যন্ত এলাকা মেনানগর। এক যুগ আগেও এ গ্রামের বাসিন্দারা ছিল অভাবী। কার্তিকের মঙ্গা শুধু নয়, ফসলাদি ভালো হতো না বলে বারো মাস অভাব লেগে থাকত। কিন্তু এখন আর সে অবস্থা নেই। ধানখেতের পানিতে মাছ চাষ, গর্ত ও পুকুরে মাছের সঙ্গে হাঁস পালন ও জমির আইলে সুপারিগাছ লাগিয়ে এই গ্রামের মানুষ ভাগ্য বদলে ফেলেছেন। এ ছাড়া বসতভিটার পরিত্যক্ত জমিতে চলছে সবজির চাষ। প্রায় প্রতিটি বাড়িতে পালন করা হচ্ছে হাঁস, মুরগি, কবুতর, ছাগল ও গাভি। এভাবে ওই গ্রামের দারিদ্র্যপীড়িত দুই শত পরিবারের বেশির ভাগেরই অবস্থা আজ সচ্ছল।
আর গ্রামবাসীর ভাগ্য বদলের কারিগর হলেন ওই গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলার হাড়িয়ালকুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। নাম তাঁর সোলায়মান আলী। ১২ বছর ধরে গ্রামবাসীকে তিনি শেখাচ্ছেন চাষবাস ও পশুপাখি পালনের নতুন কৌশল।

সোলায়মানের সংগ্রাম: সোলায়মান জানান, তাঁদের সামান্য কিছু জমি ছিল। অন্যের বাড়িতে জায়গির থেকে ১৯৮৫ সালে তিনি স্নাতক পাস করেন। তাঁর মায়ের নাম সালমা ও বাবার নাম ইউসুফ। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। অনেক ঘোরাঘুরি করে চাকরি না পেয়ে ১৯৮৯ সালে নিজ উদ্যোগে তিনি মায়ের নামে থাকা একটি পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। এতে কিছু লাভ হওয়ায় তাঁর উৎসাহ বেড়ে যায়। কিন্তু এ জন্য প্রয়োজনীয় টাকা সোলায়মানের হাতে ছিল না। বাবার কাছে টাকা চেয়ে না পেয়ে রাগ করে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। ওঠেন ফুফু মমতাজের বাড়িতে। ১৯৯০ সালে সোলায়মান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের চাকরি পেয়ে যান। টানা চার বছর চাকরি করে সেই অর্থ নিয়ে বাড়ি ফেরেন ১৯৯৪ সালে। এ বছরই একটি পুকুর খনন করে শুরু করেন মাছ ও হাঁসের চাষ। পাশাপাশি পুকুরপাড়ের চারদিকে পাঁচ শত সুপারির চারা রোপণ করেন। সেই সঙ্গে শুরু করেন ধান চাষ। কিন্তু সার, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের অগ্নিমূল্যের কারণে ধান চাষে তিনি লাভ করতে পারেননি। ১৯৯৮ সাল কেয়ারের মাঠকর্মী কামালের পরামর্শে তিনি এক একর জমির ধানখেতে মাছের চাষ করেন।

সোলায়মানের খোঁজে: সোলায়মানের বাড়ি উপজেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে মেনানগর গ্রামে। কাঁচা-পাকা পথ ধরে সম্প্রতি তাঁর বাড়ি যাওয়ার পথে ওই গ্রামে চোখে পড়ে নানামুখী উৎপাদন কর্মকাণ্ড। গ্রামের এক যুবকের সহযোগিতায় সোলায়মানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সোলায়মান নিজের ধানখেতে মাছ শিকার করছেন। সাংবাদিক পরিচয় শুনে তিনি জমি থেকে আইলে উঠে আসেন। এরপর সোলায়মান একে একে বলে যান মাছের সঙ্গে হাঁস পালন, জমির আইলে সুপারিগাছ রোপণ ও ধানখেতে মাছ চাষের গল্প।

সোলায়মানের অর্জন: ১৬ বছর ধরে হাঁস ও মাছ চাষ এবং সুপারিগাছ লাগিয়ে সোলায়মান আধা পাকা বাড়ি করেছেন। দামি কাঠের আসবাবপত্রে সাজিয়েছেন ঘর। কিনেছেন চার একর জমি। দুই মেয়েকে মাধ্যমিক (এসএসসি) পাস করিয়ে বিয়ে দিয়েছেন। স্নাতক পাস করার পর চাকরি পেয়েছেন তাঁর দুই ছেলে লাবু ও লুত্ফর। জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য বসিয়েছেন দুটি সেচপাম্প ও তিনটি শ্যালোমেশিন। বাড়িতে রয়েছে কবুতর, গাভি, ছাগল। খামারে রয়েছে ৬০০টি হাঁস। জমির চারদিকে লাগিয়েছেন এক হাজার সুপারিগাছ। ২৫ শতক জমিতে লিচু ও ২৮ শতক জমিতে আম-কাঁঠালের বাগান করেছেন। এ বছর চার একর ধানখেতে মাছ চাষ করেছেন। তিনটি পুকুরের পানির ওপর খামার করে করছেন মাছ ও হাঁসের চাষ। এখন তাঁর খামারে দুজন কর্মচারী কাজ করছেন।
২০০৪ সালে উপজেলা কৃষি বিভাগ সোলায়মানকে আদর্শ কৃষকের ও ২০০৫ সালে মৎস্য বিভাগ দক্ষ মৎস্যচাষির পুরস্কার দেয়।
সোলায়মান বলেন, ‘আমি চাই দেশের সব মানুষই মাছের সঙ্গে হাঁস ও ধানখেতে মাছের চাষ করুক। এতে লাভ আছে, মনের আনন্দ আছে। কৃষিতে একটা বিপ্লব ঘটাতে পারলেই দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব বলে আমি মনে করি।

সোলায়মানের পথ ধরে: সোলায়মান গ্রামের বহু লোককে হাঁস ও মাছ চাষ এবং সুপারিগাছ লাগাতে উৎসাহিত করেছেন। মেনানগর গ্রামের অনেকেই তাঁর মতো চাষাবাদ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন। আজমল, খায়রুল, শিপলুর বর্তমানে প্রতি মাসে আয় পাঁচ-ছয় হাজার টাকা। মন্টু মিয়া, তৈয়ব আলী, মিজানুর ও আনছার আলীর পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে। আশরাফুল, ছমেদুল, কেরামতুল্লাহ, জিয়াউলসহ অনেকেই এখন হাঁসের খামারের মালিক। শরিফুলকে এখন আর অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করতে হয় না। সোলায়মানের পদ্ধতি অনুসরণ করে তাঁর একটি পুকুর ও একটি হাঁসের খামার হয়েছে। দুটি গাভি, আটটি ছাগল ও বেশ কয়েকটি মুরগি রয়েছে। ৫০ শতক জমিও কিনেছেন শরিফুল।
কৃষক মতিন মিয়া (৪০) বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও তিন বিঘার ধানখেতে মাছ চাষ করেছেন। এতে বাড়তি ১৫-১৬ হাজার টাকা আয় হবে বলে ধারণা করছেন। আজিমুদ্দিন (৭০) বলেন, আগে খাওয়ার মাছও কিনতে হতো, এখন পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে মাছ বিক্রি করছি।

ধানক্ষেতে মাছ চাষের পদ্ধতি: সোলায়মান জানান, যে জমিতে কমপক্ষে তিন ইঞ্চি উচ্চতায় পানি রাখা সম্ভব তাতে মাছ চাষ করা যায়। প্রয়োজনীয় পানি আটকে রাখতে জমির চারদিকের আইলগুলো উঁচু করে দিতে হয়। ধান রোপণের ১৫-২০ দিনের মধ্যে জমিতে মাছের পোনা ছাড়তে হয়। শিং, মাগুর, সরপুঁটি, তেলাপিয়া, রুই, কাতলা, সিলভার কার্প চাষ করলে তুলনামূলকভাবে বেশি লাভ হয়। মাছ চাষ করলে খেতে কীটনাশক দেওয়া যায় না। মাছই ক্ষতিকারক পোকামাকড়ের ডিম খেয়ে ফেলে। যাঁরা খেতে দুবার ইউরিয়া সার প্রয়োগ করেন, এ ক্ষেত্রে একই পরিমাণ সার তিন দফায় জমিতে দিতে হয়।

হাঁস দিয়ে ধানক্ষেত নিড়ানি: সোলায়মান বলেন, হাঁস দিয়ে ধানখেত নিড়ানির কৌশল তিনি উদ্ভাবন করেন ২০০৪ সালে। ওই বছর শ্রমিকের অভাবে বোরো ধানের ক্ষেতে আগাছা পরিষ্কার করতে পারছিলেন না। জমির আইলে বসে আগাছা পরিষ্কারের ব্যাপারে ভাবতে ভাবতে দেখেন, তাঁর খামারের ২০-২৫টি হাঁস খাদ্য সংগ্রহে ধানখেতে নেমেছে। খাবার সংগ্রহের সময় হাঁসগুলো ঠোঁট ও পা দিয়ে খেতে বারবার আঘাত করছে। এতে আগাছাগুলো নষ্ট হচ্ছে। এ দৃশ্য দেখে উঠে দাঁড়ান সোলায়মান। ভাবেন কী করলে প্রতিদিন এ হাঁসগুলো ধানখেতে আসবে। এ সময় তাঁর মাথায় আসে ধানের চারা রোপণের পর জমিতে ধান ছিটিয়ে দেওয়ার কৌশল। ছিটানো ধান খাওয়ার সময় হাঁসগুলো ঠোঁট ও পা দিয়ে কাদায় বারবার আঘাত করবে। এতে নষ্ট হবে আগাছা ও আগাছার বীজ। তিনি ধানগাছ রোপণের ১৫ দিন পর প্রতি একরে ১০ কেজি ধান ইউরিয়ার সারের মতো ছিটিয়ে দেন। এভাবে সাত দিন পরপর তিনবার ধান ছিটিয়ে দিতে হবে।

কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা যা বললেন: উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আ. ওয়াজেদ বলেন, কৃষি ক্ষেত্রে সোলায়মান নতুন কৌশল প্রয়োগ করে চমক সৃষ্টি করেছেন। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন, সোলায়মান এলাকার গর্ব, সব কৃষকের মডেল। পশুসম্পদ কর্মকর্তা জিতেন্দ্র বলেন, মেনানগর গ্রামে হাঁসপালনকারীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। গত দুই বছরে ১০০ জন হাঁসপালনকারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
হাড়িয়ালকুটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী বলেন, মেনানগরের আশপাশের গ্রামগুলোতেও প্রতিযোগিতামূলকভাবে সোলায়মানের পদ্ধতিতে চাষাবাদ চলছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুন্নবী দুলাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না, সোলায়মানের খামার কত সুন্দর। ওই খামার পরিদর্শন করে এসে আমিও তাঁর মতো চাষাবাদ করার কথা চিন্তা করছি।


তথ্যসূত্র: দৈনিক প্রথম আলো

নীল চাষ করে নিখিলের দিনবদলের গল্প


ব্রিটিশ আমলে এ দেশে নীল চাষ বলতেই ছিল আতঙ্ক। ইংরেজদের জুলুমে বাধ্য হয়ে ফসলের জমিতে নীল চাষ করতেন কৃষকেরা। দুবেলা দুমুঠো ভাতের আশা জলাঞ্জলি দিয়ে বেনিয়াদের হাতে তাঁরা তুলে দিতেন কাপড় রাঙানোর উপকরণ। অনেক আগেই সেই দুর্দিনের অবসান ঘটেছে।
কৃষকেরা এখন নীল চাষ করেন লাভের আশায়। তাঁদেরই একজন রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার যুবক নিখিল রায়। তিনি শুধু নীল চাষই করেন না, নীল তৈরির পর তা বিক্রিও করেন। গঙ্গাচড়ায় বাণিজ্যিকভাবে নীল উত্পাদনের পথিকৃত্ তিনি। তাঁর কারখানায় কাজ করে স্থানীয় অনেক দুস্থ পরিবার খুঁজে পেয়েছে জীবিকার পথ।

নিখিলের সংগ্রাম: ১৯৮০ সালে গঙ্গাচড়ার হরকলি ঠাকুরপাড়া গ্রামের মধ্যবিত্ত এক পরিবারে নিখিলের জন্ম। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়। ২০০২ সালে নিখিল পল্লী চিকিত্সক হিসেবে গ্রামের মানুষের চিকিত্সা শুরু করেন। এ সময় অনেক অভাবী মানুষকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয় তাঁর। তাদের জন্য কিছু করার তাগিদ অনুভব করেন নিখিল। ২০০৩ সালে নিখিল বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীনে পাট বহুমুখীকরণ প্রকল্পে পাট পণ্যের বিভিন্ন ব্যাগ তৈরির ওপর ২০ দিনের প্রশিক্ষণ নেন। এরপর অভাবী মানুষকে নিয়ে নিজের জমির ওপর ঘর তুলে সেখানে হস্ত কুটিরশিল্প প্রশিক্ষণ ও কল্যাণকেন্দ্র চালু করেন। সেখানে অভাবী লোকদের কুটিরশিল্পের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়। গ্রামের প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসনে তিনি চালু করেন প্রতিবন্ধী আবাসন প্রকল্প। প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের মোমবাতি, আগরবাতিসহ বিভিন্ন জিনিস তৈরির কাজে লাগান নিখিল।

২০০৬ সালে এমসিসি বাংলাদেশ নামের একটি দাতা সংস্থার অধীনে নীল তৈরির ওপর প্রশিক্ষণ নেন নিখিল। গ্রামের কিছুসংখ্যক নারীও এ প্রশিক্ষণ নেন। এরপর সংস্থার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় নীলগাছের পাতা থেকে নীল উত্পাদন শুরু করেন নিখিল।
নিজের দেড় একর জমিতে এখন নীল চাষ করছেন নিখিল। অন্যের জমি থেকেও তিনি নীলের পাতা কিনে নীল তৈরি করেন। বিক্রি করেন ঢাকার বিভিন্ন সুতা ও কাপড় তৈরির কারখানায়। প্রতি কেজি নীল উত্পাদনে শ্রমিকের মজুরিসহ খরচ পড়ে প্রায় এক হাজার টাকা। উত্পাদিত প্রতি কেজি নীল বিক্রি করে তিনি পান দেড় হাজার টাকা। বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে প্রায় ১২ লাখ টাকার নীল উত্পাদন করে বিক্রি করা হয়। এতে লাভ হয় প্রায় তিন লাখ টাকা। মুনাফার টাকা থেকে দুস্থ শ্রমিকদের তিনি সহায়তা করেন বলে শ্রমিকেরা জানান।
নিখিলের স্ত্রী কণিকা রানী বলেন, ‘লোকজন যখন আমার স্বামীর প্রশংসা করেন, তখন খুব ভালো লাগে।’

কারখানায় একদিন:রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে খলেয়া ইউনিয়নের হরকলি ঠাকুরপাড়া গ্রাম। এখানেই গড়ে উঠেছে নিখিল রায়ের নীল ও অন্যান্য পণ্য তৈরির কারখানা। উপজেলা সদর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে ওই কারখানায় যাওয়ার পথে সড়কের দুই ধারে অনেক নীলক্ষেত চোখে পড়ে।
সম্প্রতি কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, একটি ঘরে কয়েকজন নারীশ্রমিক নীল তৈরির কাজে ব্যস্ত। আরেকটি ঘরে প্রতিবন্ধী কয়েকজন যুবক তৈরি করছেন মোমবাতি, আগরবাতি, হাতপাখা, রুমাল, নকশিকাঁথা, খেলনা প্রভৃতি। অনেকে পাট দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ তৈরিতে ব্যস্ত। একটি কক্ষে কাজের মান উন্নয়নে কিছুসংখ্যক কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন নিখিল। কারখানার শ্রমিকদের সন্তানদের বিনামূল্যে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন নিখিলের স্ত্রী কণিকা রানী। কয়েকজন শ্রমিক বলেন, ‘নিখিলের এখানে কাজ করে আমরা আগের চেয়ে ভালো আছি। আমাদের সন্তানেরাও পড়াশোনা করতে পারছে।’

নীল তৈরির পদ্ধতি:নিখিল জানান, প্রথমে নীলগাছের পাতা জোগাড় করা হয়। পাতাগুলো ১২ ঘণ্টা ড্রামের পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। পানির রং হালকা সবুজ হলে তা আরেকটি ড্রামে ঢালা হয়। ৩০ মিনিট ধরে ঝাঁকুনি দেওয়ার পর ড্রামের পানিতে প্রচুর ফেনা হয়। ফেনাসহ পানি ড্রাম থেকে নল বা বালতির সাহায্যে পাতলা কাপড় বিছানো বাঁশের ঝুড়িতে ঢালা হয়। ১০-১২ ঘণ্টার মধ্যে পানি কাপড় ভেদ করে বের হয়ে যায়। তখন কাপড়ের ওপর এক ধরনের তরল তলানি পড়ে। চামচের সাহায্যে তলানি সংগ্রহ করে তা রোদে শুকানো হয়। দুই-তিন দিন রোদে শুকালে এটি কঠিন হয়ে যায়। এই কঠিন জিনিসটি পিষে নীল তৈরি করা হয়। নীলের সঙ্গে হরিতকীর গুঁড়া মেশালে তা সোনালি রং ধারণ করে। কলার মোচা পিষে মেশালে নীলে কালচে আভা পড়ে। প্রতিবছর জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নীল তৈরি করা হয়।

নীলগাছের আরও গুণ: নিখিল রায় জানান, বিনামূল্যে বীজ বিতরণসহ চাষিদের উদ্বুদ্ধ করার কারণে এলাকায় এখন ব্যাপকভাবে নীল চাষ হচ্ছে। নীলচাষির সংখ্যা এর মধ্যে এক হাজার ছাড়িয়েছে।
নীলগাছ উন্নতমানের সবুজ সার তৈরির উপকরণ। এলাকাবাসীর কাছে নীলগাছ ‘মালগাছ’ নামে পরিচিত। নীলগাছ সাধারণত পাঁচ-ছয় ফুট লম্বা হয়। পাতা খুব সরু ও ছোট। গরু-ছাগল নীলগাছের পাতা খায় না। গাছ উত্পাদনে রাসায়নিক বা গোবর সারের প্রয়োজন হয় না।
ঠাকুরপাড়া গ্রামের কৃষক শামসুল হক জানান, কচি নীলগাছ মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিলে তা উন্নতমানের সবুজ সারে পরিণত হয়। এ ছাড়া গাছ উঠিয়ে গর্তে পচিয়েও সবুজ সার তৈরি করা হয়।
শলেয়াশাহ গ্রামের সাদেকুল ইসলাম বলেন, আলু ও তামাক চাষের আগে জমিতে সবুজ সার হিসেবে নীল চাষ করলে ফলন বাড়ে। জ্বালানি হিসেবে এ অঞ্চলে নীলগাছের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ বলেন, উন্নতমানের সবুজ সার পাওয়া যায় বলে এ অঞ্চলের অনেক কৃষক এখন নীল চাষের দিকে ঝুঁকেছেন। নীল চাষ ও উত্পাদনে নিখিলের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁর এ উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার।’


তথ্যসূত্র: দৈনিক প্রথম আলো

একটি পোল্ট্রি খামারের অনুকরণীয় সাফল্য



লেখক: মোঃ শহীদুল ইসলাম
বিজনেস ডেভলপমেন্ট ম্যানেজার-এজি, এ্যাডভান্স এনিমেল সায়েন্স কোং লিঃ
জামালপুর জেলার ইসলামপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্থাপিত "ভাই ভাই পোল্ট্রি ফার্ম" ডিম উৎপাদনের ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। আলোচ্য লেয়ার খামারের মালিক জনাব রঞ্জু খান লোহানী বিগত ২০০৭ সালে খামারটি স্থাপন করেন। তিনি এ্যাডভান্স এনিমেল সায়েন্স কোং লিঃ-এর মাধ্যমে সর্বপ্রথম ২/০৬/২০০৭ তারিখে ১৫০০টি এক দিনের Lohmann Brown LSD বাচ্চা তাঁর খামারে আনেন এবং সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে প্রতিপালন শুরু করেন। প্রথম থেকেই তিনি নিজে খাদ্য প্রস্তুত করেন এবং অদ্যাবধি একই উপায়ে খাদ্য প্রস্তুত করে মুরগীকে পরিবেশন করছেন। যখন তাঁর মুরগীর বয়স ২০ সপ্তাহ হয় তখন থেকে ডিম উৎপাদন শুরু হয়। ২১ সপ্তাহ বয়সে ডিম উৎপাদন ৭০% এ পৌছায়। বর্তমানে তাঁর মুরগীর বয়স ১১২ সপ্তাহ অথচ এখনও ডিম উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ৭০% হারে। উল্লেখ্য যে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সাধারণত ডিম উৎপাদন সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে ৭৫-৮০ সপ্তাহ বয়সে এবং এর পরবর্তী পর্যায়ে ধীরে ধীরে কমতে থাকে কিন্তু জনাব রঞ্জুর খামারে অদ্যাবধি ডিম উৎপাদন প্রায় একই পর্যায়ে রয়েছে যা অনেকটা বিষ্ময়কর। অবশ্য এর আগে তাঁর খামারে ডিম উৎপাদন ৯০% এর উপরে ছিল।

জনাব রঞ্জুর খামারের এই বিষ্ময়কর সাফল্যের কারণ জানার জন্য তাঁর সাথে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সরেজমিনে খামারটি পরিদর্শন ও তাঁর বাস্তব অভিজ্ঞতার চিত্রটি উপস্থাপিত হলো।

০ তিনি বাচ্চা আনার পূর্বে পরিকল্পিতভাবে ফার্মের স্থান ও সঠিক মাপের ঘর তৈরি করেন।
০ টিনের নীচে বাঁশের চাটাইয়ের সিলিং দিয়ে তাপমাত্রা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যবস্থা করেন।
০ মুরগির ঘরের ওভার হ্যাং ৪-৫ ফুট রাখা হয়েছে যার ফলে সূর্যের আলো কোনো ক্রমেই ঘরের ভিতর প্রবেশ করতে পারে না।
০ বাচ্চা আনার ২৪ ঘন্টা পূর্বে ঘরটি ফিউমিগেশন করা হয়েছে।
০ পরিমিত সংখ্যক ফিডার, ড্রিংকার, লিটার ও বাচ্চা পালনের অন্যান্য সরঞ্জামাদির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়।
০ বাচ্চা আনার ১২ ঘন্টা পূর্বে খামার পুনরায় পরিষ্কার করে ফিউমিগেশন করা হয়েছিল।

ব্রুডারে বাচ্চা ছাড়ার পর গৃহীত ব্যবস্থাদি
০ বাচ্চা অতি দ্রুত বক্স থেকে ব্রুডারে ছেড়ে দেয়া হয়।
০ সঠিক তাপমাত্রার পানি পরিমিত সংখ্যক পানির পাত্রে সরবরাহ করা হয়েছিল।
০ শুকনা, পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত লিটার ব্যবহার করা হয়েছে।
০ ব্রুডারে বাচ্চা নেয়ার ১২ ঘন্টা পূর্ব হতে তাপ প্রদান শুরু হয়।
০ পানিতে ৩ পি.পি.এম. ক্লোরিন মিশ্রিত করা হয়েছিল।
০ প্রথম ৩-৪ ঘন্টা পানির সাথে ৪% গ্লুকোজ খাওয়ানো হয়েছে যাতে বাচ্চার রক্তের ভিসকোসিটি ও অসমোলারিটি নিয়ন্ত্রণে থাকে।
০ বাচ্চার যাতে তরল পায়খানা বা পেস্টিভেন্ট দেখা না দেয় সেজন্য ১ম ও ২য় দিন পরিষ্কার ভুট্টা ভাঙ্গা খাওয়ানো হয়েছে।

খাদ্য সরবরাহ
০ বাচ্চা ফোটার ১ম দিন থেকেই সব সিস্টেমের কার্যক্রম চালু হয়। কাজেই এসময় বাচ্চাকে নিয়মিত পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে।
০ বিজ্ঞানী ডিবনার্সের গবেষণায় দেখা গেছে যে, বাচ্চা ফোটার ১ম দিন থেকেই বাচ্চার বিভিন্ন সিস্টেমসমূহ কার্যকর হতে শুরু করে। যেমন- ক্ষুদ্রান্ত্রের উন্নতি সাধন, ইমিউন সিস্টেমের উন্নয়ন, মাংস পেশী বৃদ্ধি এবং তাপ সহিষ্ণুতা বৃদ্ধি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলী সঠিক সময়ে উপযুক্তভাবে সংগঠিত হতে থাকে।
০ এই ফার্মে ১ম দিন থেকেই পুষ্টি সমৃদ্ধ লেয়ার স্টার্টার ফিড পর্যাপ্ত সংখ্যক ফিডারে নিয়মিতভাবে বারংবার পরিবেশন করা হয়েছে। ফলে বাচ্চাতে দীর্ঘ মেয়াদী ডিম উৎপাদনের ক্ষমতা অর্জিত হয়েছে।

ব্রুডিং ব্যবস্থাপনা
ব্রুডারটি বাচ্চা প্রবেশ করানোর ১২ ঘন্টা পূর্বেই তাপায়িত করা হয়েছিল।

তাপমাত্রা
১) বাচ্চার ঘরে সর্বদা ৩০-৩২ সে. তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
২) এই খামারী ব্রডারের তাপমাত্রা সবসময় বাচ্চার ঘরের তাপমাত্রা অপেক্ষা ১-২০ সে. বেশি রেখেছে। ফলে বাচ্চা সুস্থ অবস্থায় সঠিকভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়েছে।
৩) উক্ত ফার্মে নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রার সিডিউল ছিল নিম্নরূপঃ


দিন/সপ্তাহ তাপমাত্রা মেঝেতে (সেলসিয়াস/ ফারেনহাইট)
দিন ১ম-২য় ৩০ সে/ ৯৩.২০ ফা
দিন ৩য়-৪র্থ ৩২ সে/ ৮৯.৬০ফা
দিন ৫ম-৭ম ৩০ সে/ ৮৬০ ফা
সপ্তাহ ২য় ২৯ সে/ ৮৪.২০ ফা
সপ্তাহ ৩য় ২৭ সে/ ৮০.৬০ ফা
সপ্তাহ ৪র্থ ২৪ সে/ ৭৫.২০ ফা
সপ্তাহ ৫ম ১৯ সে/ ৬৬.২০ ফা

০ ঘরের তাপমাত্রা, আদ্রর্তা এবং ঠান্ডা ও মুক্ত বাতাস চলাচলের জন্য তিনি ঘরের পাশ দিয়ে পানি প্রবাহের একটি পাকা নালা (১৫০'×৫' × ৩") চালু রেখেছেন যেখান দিয়ে সর্বদা টাটকা পানি প্রবাহিত হয়। এই পানি প্রবাহের ফলে ঘরের তাপমাত্রা ও আদ্রর্তা নিয়ন্ত্রিত হয়। এছাড়াও সর্বদা ধূলিমুক্ত ঠান্ডা বাতাস ঘরে প্রবেশ করে। এর ফলে ঘরে কোনো গ্যাস সঞ্চিত হতে পারে না এবং ঘর দুর্গন্ধমুক্ত থাকে।
০ খামারে বাচ্চা আনার পর থেকে তিনি ব্রুডিং, রিয়ারিং ইত্যাদি অত্যন্ত নিবিড়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছেন। বাচ্চা আনার পর ২-৩ দিন পর্যন্ত তিনি এ বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন।
০ বাচ্চা আনার পর ৭-১০ দিন পর্যন্ত ঘরের আলোক নিয়ন্ত্রণ করেছেন নিবিড়ভাবে।
০ বাচ্চা আনার পর ব্রুডিং পর্বে তিনি বাচ্চাদের এমনভাবে পরিচর্যা করেছেন যে এরা নিয়মিত খাদ্য ও পানি গ্রহণ করেছে এবং এদের মাঝে সবসময় কর্মচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা গেছে।
০ ব্রুডিং ব্যবস্থা উন্নততর হওয়ায় বাচ্চারা একই সাথে অবসর নেয় বা নিদ্রা যায়। বাচ্চাদেরকে সতত ব্যস্ত রাখা হয়েছে যাতে সবল ও অপেক্ষাকৃত দুর্বল বাচ্চারা সকলেই খাদ্য গ্রহণ ও পানি পানে উৎসাহিত থাকে। এর ফলে ঝাঁকের সব বাচ্চার মাঝে সমতা ও সামঞ্জস্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।
০ ব্রুডিং পর্যায় যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় বাচ্চাদের থাইরয়েড গ্রন্থি, পরিপাকতন্ত্র ও দেহের অভ্যন্তরীণ অর্গানসমূহ সঠিকভাবে গড়ে ওঠে ও এদের দৈহিক বর্ধন আশানুরূপ হয়।
০ খামারে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।
০ খামারের প্রবেশ পথে জীবাণুনাশক পূর্ণ ফুটডিপ রয়েছে যা সপ্তাহে দুই বার পরিবর্তন করা হয়।
০ খামারে যারা কাজ করেন তারা সকলেই খামারের কাপড়-চোপড় ও জুতা/স্যান্ডেল ব্যবহার করেন।
০ খামারে জীবনিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুসারিত হলেও পারিপার্শ্বিক ও ভৌগলিক কারণে তা অত্যন্ত কঠোরভাবে পালন করা সম্ভব হয় না এটা স্পষ্টত বোধগম্য। তথাপি তিনি তাঁর খামার সম্পূর্ণ রোগমুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছেন কতকগুলি কারণে-
* তিনি তাঁর খামারের মুরগীকে সঠিক রুটিন অনুযায়ী প্রতিটি সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে নিয়মিত ভ্যাকসিন প্রদান করিয়ে নিয়েছেন এবং এসকল ভ্যাকসিনই অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান হতে উৎপাদিত।

* এখানে উল্লেখ্য যে তিনি তার মুরগীকে ১দিন বয়স থেকেই অদ্যাবধি "খা চিং লিং" (চীন হতে আমদানিকৃত) দেহবর্ধক সম্পূরক খাদ্যোপাদান খাদ্যের সাথে সাথে প্রদান করে থাকেন। "খা চিং লিং" প্লীহা ও পরিপাকতন্ত্রকে সুদৃঢ় করে। এটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শুধু তাই নয় এটা নিয়মিত ব্যবহারের ফলে পোল্ট্রির উৎকর্ষতা যেমন দৈহিক ওজন বৃদ্ধি, খাদ্য সদ্ব্যবহারের হার ও ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি করে। এছাড়াও রাণীক্ষেত রোগ ও অন্যান্য ভাইরাল রোগের বিরুদ্ধেও খা চিং লিং প্রতিরক্ষা প্রদান করে থাকে।

এ প্রসঙ্গে জনাব রঞ্জু বলেন, তাঁর খামারের আশেপাশে অনেক মুরগির খামার ছিল কিন্তু এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্রমাগত সংক্রমণের ফলে ঐ সকল খামারের মুরগি রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত উক্ত সকল খামার বন্ধ হয়ে গেছে। এই মারাত্তক মহামারীর ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ছিলেন এবং তা প্রতিরোধের ব্যাপারে সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা কামনা করেন ঢাকাস্থ এ্যাডভান্স এনিমেল সায়েন্স কোং লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ এম এম খানের নিকট। প্রকৃতপক্ষে তাঁরই পরামর্শক্রমে তিনি প্রথম থেকেই নিয়মিতভাবে মুরগিকে খা চিং লিং প্রদান করেন এবং ফলশ্রুতিতে অদ্যাবধি তাঁর খামার সম্পূর্ণরূপে রোগমুক্ত রয়েছে।

জনাব রঞ্জু জানান, তিনি তাঁর খামার স্থাপন করার শুরু থেকে তা পরিচালনার ক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক কারিগরি ও সর্বপ্রকার সহায়তা পেয়েছেন ডাঃ এম এম খানের নিকট থেকে। তার খামারের অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য তিনি ডাঃ এম এম খানের সার্বিক সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।


তথ্যসূত্র: পোলট্রি, পশুসম্পদ ও মৎস্য বিষয়ক মাসিক পত্রিকা ‘খামার’

মধুপুরের মধুর ফসল ভুট্টা


লেখক : আমিনুল ইসলাম জুয়েল
পাবনার মধুপুরের চাষিরা ভুট্টাকে সোনার দানাজ্ঞান করে চাষ করছেন। চাষিদের আগ্রহ, কৃষি গবেষণা কেন্দ্র ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের চেষ্টায় মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে এখানে ভুট্টা চাষে রীতিমতো বিপ্লব ঘটে গেছে। মুনাফা বেশি হওয়ায় চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়েছেন। শুধু ভুট্টা চাষেই নয় এখানে ভুট্টা চাষের কলাকৌশল নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। বেশির ভাগ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।

গোড়ার কথা: ২০০০ সালের কথা। কৃষি গবেষণা কেন্দ্র পাবনার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সদর উপজেলার মধুপুর এলাকার চাষিদের ভুট্টা চাষের উপযোগিতা, বেশি ফলন, উৎপাদন খরচ কম, লাভজনক দিক ইত্যাদি বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করার পর চাষিরা ভুট্টা চাষে এগিয়ে আসেন। বীজ ও সার বিনামূল্যে দেয়ার পরও মাত্র পাঁচ-ছয়জন চাষি ২১ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেন। অনেক চাষি কথা দিয়েও অন্য ফসল বুনেছিলেন। কিন্তু ভুট্টার ফলন, দাম ও লভ্যাংশ হাতে পেয়ে চাষিদের চোখ খুলে যায়। ২০০১ সাল থেকে এ মাঠে ভুট্টা চাষে চাষিদের মধ্যে জোয়ার বইতে থাকে।

বর্তমান চাষাবাদ: পাবনা-নগরবাড়ী মহাসড়কে আতাইকুলা পাড়ি দিলেই রাস্তার দু’পাশের মাঠে উঁচু উঁচু সবুজের সারি। আতাইকুলা, গঙ্গারামপুর, কুচিয়ামোড়া পাড়ি দিয়ে মধুপুর এলেই মনে হবে কোনো এক সবুজ অরণ্য। এখন মধুপুর ব্লকে ৬০০ বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ হচ্ছে। অন্তত ২০০ চাষি পরিবার এখন অন্যান্য শীতকালীন ফসল কমিয়ে ভুট্টা চাষ বাড়িয়ে দিয়েছেন। আগামী মৌসুমে মধুপুরের মাঠে অন্তত দুই হাজার বিঘা ভুট্টা চাষ হবে বলে চাষিরা জানান।
এখানকার চাষিরা উচ্চফলনশীল জাতের সব ভুট্টা চাষ করে অধিক ফলন লাভ করছেন। এখানে হাইব্রিড জাতের প্যাসিফিক-১১, প্যাসিফিক-৯৮৩, প্যাসিফিক-৯৮৪, মুক্তা ৯০০ এম, ডব্লিউটিএল প্রভৃতি উফশী জাতের ভুট্টা চাষ হচ্ছে।

গবেষণা ও চাষি প্লট: মধুপুর ভুট্টা ব্লক দেশের অন্য ১০টি ব্লক থেকে আলাদা। কারণ এই ব্লকের অর্ধশত বিঘা জমি গবেষণা প্লট হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে। কৃষি গবেষণা কেন্দ্র ব্যবস্খাপনার বিষয়গুলো সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করছে। সঠিক ব্যবস্খাপনায় অর্থাৎ সার বীজ ঠিকমতো বপন, প্রসেসিং, সংরক্ষণ দ্বারা চাষি কতটুকু লাভবান আর অন্যথা হলে কেমন ক্ষতি হয় তা পর্যালোচনা করছেন। গবেষণা প্লটে বিভিন্ন সারের ফলন পরীক্ষার পাশাপাশি কোন প্লটে সার কম, কোনোটিতে বেশি, কোনোটিতে জৈব সার বেশি, কোনোটিতে অ্যাকটিভ কম্পোস্ট, কোনোটিতে শুধু রাসায়নিক সার, শুধু জৈবসার, কোনো প্লটে রাসায়নিক সার না দিয়ে ভুট্টা চাষ করা হচ্ছে। চাষিরা সরেজমিন দেখে ভালো ফল পাওয়া প্লটের অনুসরণ করছেন। কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক সহকারী চণ্ডিদাস কুণ্ডু আমাদের বিভিন্ন প্লট ঘুরিয়ে দেখানোর পাশাপাশি জানালেন, ৭৫ শতাংশ রাসায়নিক সার আর ২৫ শতাংশ জৈবসারে সবচেয়ে ভালো ফলন পাওয়া গেছে। গবেষণা প্লটের ফলন এসেছে বিঘাপ্রতি ৩৬ মণ। চাষি পর্যায়ে তা ৩০-৩২ মণ। সর্বোচ্চ ফলন দেয়া পদ্ধতিটিই চাষির জন্য সুপারিশ করা হয়।
চাষি পর্যায়ে ভুট্টা চাষেও এখানে আরেকটি গবেষণার ধারাবাহিকতা কাজ করছে। পারিবারিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাষিদের ভুট্টা চাষে আগ্রহী ও অভিজ্ঞ করে তোলা হচ্ছে। পারিবারিক প্রশিক্ষণ ও এর উপযোগিতা সম্বন্ধে তারা বলছিলেন, ভুট্টা চাষ যে লাভজনক তা চাষি পরিবারের সবাইকে বোঝানো হয়। এতে ভুট্টা চাষ নিয়ে পারিবারিকভাবে আর দ্বিমত আসে না। আর প্রযুক্তিগত সুবিধা হলো পরিবারের প্রত্যেকটি লোকই জানতে পারে ভুট্টা আবাদে প্রতি লাইন ও বীজের মাঝে কতটুকু দূরত্ব রাখতে হয়। কতটুকু রাসায়নিক ও জৈবসার দিতে হয়। এ ছাড়া অন্যান্য কলাকৌশলও জানেন। এতে সুবিধা হলো একজন ভুলে গেলেও অন্যজনের খেয়ালে থাকে। সঠিক প্রযুক্তিটি প্রয়োগ হয়। ফলে ভালো ফলন আসে।

আন্ত:ফসল:
ভুট্টা চাষে নয়া দিগন্ত:

পেঁপে ক্ষেতে হলুদ, আখ ক্ষেতে ফুলকপি এরকম সাথী ফসলের চাষ দেশে এখন নতুন কোনো প্রযুক্তি নয়। এরকম চাষ অহরহ হচ্ছে। কিন্তু ভুট্টা ক্ষেতে সাথী ফসল নতুন কথাই বটে। তাও আবার গোল আলুর মতো অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল। এতে লাভের ওপর ডাবল লাভ। হ্যাঁ, এমন লাভজনক প্রযুক্তির সফল প্রয়োগ হয়েছে পাবনায় মধুপুর ভুট্টা ব্লক থেকে। ২০০৫ সাল থেকে চাষিরা ভুট্টার ক্ষেত থেকে বোনাস হিসাবে আলু পান। শুধু আলু নয় চাষ হয়েছে লালশাক, পালংশাক, মুলা ইত্যাদি। ভুট্টার সাথে আন্ত:ফসল সমন্ধে মধুপুরের চাষি বজলুর রহমান দুলাল, বাক্কী বিল্লাহ জানালেন, ভুট্টার দুই সারির মাঝে ৭৫ সেন্টিমিটার সিড টু সিড দূরত্ব থাকে ২৫ সেন্টিমিটার । দুই সারির মাঝে ওই ৭৫ সেন্টিমিটারের মধ্যে এক সারি কিংবা দুই সারি করে গোল আলু লাগিয়ে দেয়া হয়। গোল আলুর বদলে লালশাক, পালংশাকও চাষ করা যায়। তারা গোল আলুর আবাদ করে ভালো মুনাফা পেয়েছেন। কৃষি গবেষণা ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মীরা জানালেন, সাথী ফসল হিসাবে আলু বিঘাপ্রতি ২০-৩৫ মণ পর্যন্ত পাওয়া যায়। এতে ভুট্টার ফলনের কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। কৃষি কর্মীরা জানান, ভুট্টার আন্ত:ফসল হিসাবে আলু চাষ করে ভুট্টা ছাড়াই শুধু আলু বিক্রি করে বিঘাপ্রতি পাঁচ হাজার থেকে আট হাজার টাকা পাওয়া সম্ভব। আর অন্যান্য সবজি চাষ করে ভুট্টা চাষের খরচ উঠে যায়।

সম্ভাবনায় উজ্জ্বল বেবিকর্ন:
মধুপুর ভুট্টা ব্লকের অনেক চাষি বেবিকর্নের চাষ করেও লাভবান হচ্ছেন। পুড়িয়ে খাওয়ার উপযোগী কচি ভুট্টাই বেবিকর্ন। এখানে উৎপাদিত বেবিকর্ন জেলার বিভিন্ন স্খানে সরবরাহ হয়। ফেরিওয়ালারা কচি মোচা পুড়িয়ে বিক্রি করে। এতে চাষিরা আগাম অর্থ ঘরে তোলেন।

ভুট্টার ফলন বিপণন ও মুনাফা:
মধুপুরের মাঠে বিঘাপ্রতি ফলন আসছে ২৮-৩০ মণ, যাতে চাষিরা বিঘাপ্রতি আট থেকে নয় হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। সাথী ফসল থেকে আরো তিন হাজার টাকা আসে। বিঘাপ্রতি হাজার তিনেক টাকা খরচ বাদ দিয়েও চাষিদের ভালো মুনাফা থাকে। এ ছাড়া বিঘাপ্রতি অন্তত ৫০-৬০ মণ জ্বালানি পাওয়া যায়; যার বাজার মূল্য অন্তত দুই হাজার টাকা আর ভুট্টা উত্তোলনের সময় কচি ডগা ও পাতা পাওয়া যায় উত্তম গোখাদ্য হিসেবে।

গনি মিয়ারা এখন গরিব নয়:
গনি মিয়ারা এখন গরিব নয়। গনি মিয়া একজন গরিব চাষি, শৈশবের পাঠ্য বইয়ের এ বহুল প্রচলিত কথাটি আর যা হোক মধুপুরের চাষি গনি মিয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তিনি এখন অগ্রসর ও উন্নত চাষি। কারণ তার ১২ বিঘা জমির ছয় বিঘাতেই ভুট্টা চাষ করেন। ৭০ বছর বয়সী আবদুল গনি বলেছিলেন, গমে বিঘাপ্রতি চার-সাত মণ ফলন পাওয়া যায়। গমের তুলনায় ভুট্টা দ্বিগুণ লাভজনক। লাভজনক এ ফসল চাষ করে শুধু তিনি নন, লাভবান হয়েছেন মধুপুরের খন্দকার বজলুর রহমান দুলাল, বাক্কী বিল্লাহর মতো শত শত চাষি। আবতুল করিমের ছেলে বাক্কী বিল্লাহ এ অঞ্চলের পথিকৃৎ ভুট্টাচাষি। কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের কথামতো কেউ যখন ভুট্টা করতে চাইছিল না তখন এই বাক্কী বিল্লাহই প্রথম ঝুঁকি নেন। তিন বিঘা জমিতে ভুট্টা করেছিলেন। এ বছর চাষ করেছিলেন ১০ বিঘা জমিতে। তিনি শুধু ভুট্টা চাষই করেন না; উন্নত হাইব্রিড জাতের বীজও চাষিদের কাছে সরবরাহ করেন।

শেষ কথা:
দারিদ্র্যবিমোচন, কর্মসংস্খান, অধিক মুনাফা, জ্বালানির অভাব দূর হওয়াসহ এ অঞ্চলে ভুট্টা চাষের অনেক সুবিধার পাশাপাশি কিছু প্রতিবìধকতা তো রয়েছেই। হাইব্রিড ভুট্টার বীজ পেতে এখানে বেশ বিলম্ব হয়। এ জন্য চাষাবাদে একটু বিঘিíত হয়। মোচা থেকে ভুট্টা আহরণের জন্য চাষিদের বড় মেশিন নেই এবং ভুট্টা বেশি দিন সংরক্ষণের জন্য এখানে কোনো সংরক্ষণাগার নেই। এ বিষয়গুলোর সমাধান হলে মধুপুরের ভুট্টা চাষ সারাদেশের জন্য একটি মডেল হতে পারে।


তথ্যসূত্র: দৈনিক নয়াদিগন্ত

ফুল চাষে ভাগ্য বদল


লেখক: সৌম্যব্রত
কবি সত্যেন্দ্র নাথ দত্ত ফুলপ্রেমীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘ জোটে যদি মোটে একটি পয়সা খাদ্য কিনিও ক্ষুধার লাগি, দু’টি যদি জোটে তবে একটিতে ফুল কিনে নিও হে-অনুরাগী।’ সৌন্দর্যপিপাসু মানুষের কাছে ফুলের আবেদন চিরন্তন। সভ্যতার ক্রম বিকাশের সাথে সাথে ফুলের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেড়ে চলেছে। ফলে ভালোবাসার ফুলে লেগেছে বাণিজ্যের ছোঁয়া। দিন দিন বেড়ে চলেছে ফুলের চাষ ও ব্যবহার। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়ও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এখন ফুল চাষ হচ্ছে। উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়নের চর খাগরিয়ার বিলজুড়ে আবাদ করা হচ্ছে নানা জাতের ফুল। এক দশক আগেও ধান, আলু, মরিচ, মুলা, বেগুনসহ প্রচলিত মৌসুমি ফসলের চাষাবাদে সীমাবদ্ধ ছিল তাদের কৃষিকাজ। কিন্তু এখন দিন বদলে গেছে। সেই চাষিরাই এখন বিলজুড়ে আবাদ করছে নানা জাতের ফুল। চাষিরা জানিয়েছেন, অন্যান্য ফসলের চেয়ে ফুল চাষে লাভ অনেক বেশি। আর ফুল চাষ করার ফলে খাগরিয়ার অনেক বেকার নারী-পুরুষের কর্মসংস্খান সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষেতে আগাছা পরিষ্কার, ফুল ছেঁড়া, ফুলের মালা গাঁথাসহ অনেক কাজে এলাকার নারীও সম্পৃক্ত হয়েছে।
পরিদর্শনকালে দেখা যায়, চর খাগরিয়ায় চাষ করা হয়েছে লাল গোলাপ, সাদা গোলাপ, রজনীগìধা, ভুট্টা ফুল, গাঁদা, বেলি, কামিনী, সূর্যমুখী, ডায়মন্ড, গরম ফেনিয়া, জারবরা, রতপুসুটি, টুনটুনি, জিপসি, স্টারকলি ও চন্দ্রমল্লিকাসহ নানা জাতের ফুল। সফল ফুলচাষি খাগরিয়ার আবদুল মোতালেব জানান, ১৯৮৮ সালের এসএসসি পরীক্ষা দিই। এ সময় ছয় ভাই চার বোনসহ ১২ জনের সংসারের অভাব অনটন দেখা দিয়েছিল। তখন ভাই বোনদের মধ্যে আমি সবার বড় হওয়ায় পরীক্ষার ফলের জন্য অপেক্ষা না করে নেমে পড়ি জীবন সংগ্রামে। চাকরি নিই চট্টগ্রামে চেরাগী পাহাড়ি এলাকায় বাংলাদেশ নার্সারিতে। একটানা তিন বছর চাকরি করেছি। এর পর ফুলের দোকানে চাকরির অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে নেমে পড়ি ফুল চাষে। কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই বাড়ির পাশের ১৪ শতাংশ জমিতে ফুলের চাষ করি। প্রথম বছরেই পাঁচ হাজার টাকা পুঁজিতে লাভ হয় প্রায় ১০ হাজার টাকার মতো। মোতালেব আরো জানান, প্রথম বছরেই ভালো লাভ হওয়াতে পরের বছর আরো বেশি জমিতে ফুলের চাষ করি। কিন্তু তখন শহরে গিয়ে ফুল বিক্রি করতে হতো। অনেক সময় ঠিকমতো দাম থেকে বঞ্চিত হতাম। তাই খাগরিয়ায় উৎপাদিত ফুল বিক্রির জন্য চট্টগ্রাম শহরের চেরাগী পাহাড়ের মোড় এলাকায় নিজেই স্টার পুষ্প বিতান নামে একটি দোকান গড়ে তুলি। বর্তমানে মোতালেব ১৬-১৭ কানি জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলের আবাদ করছেন। মোতালেব, গফুর, রহিম, আনিস ও মাবুদসহ ছয় ভাই মিলেই ফুল চাষকে পেশা হিসেবে নিয়ে জীবন পাল্টে ফেলেছেন। মোতালেব জানান, ফুল চাষ করে তিনি সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন। ছয় লাখ টাকা খরচ করে দুই বোনকে বিয়ে দিয়েছেন। পাকা বাড়ি নির্মাণ ও প্রাইভেট কার সব ফুল চাষের মাধ্যমে হয়েছে। আর উপজেলায় শ্রেষ্ঠ ফুলচাষি হিসেবে একাধিকবার পুরস্কারও পেয়েছেন। তার পরিকল্পনা আরো অধিক জমিতে ফুল চাষ করা। মোতালেবের মতো আরো অনেকে ফুল চাষ করে ভাগ্য বদলে নিয়েছেন। খাগরিয়ায় ফুল চাষ করে চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড় এলাকায় মাধুরীলতা,বাহাদুর নার্সারি ও ডালিয়া নামে দোকান গড়ে তুলেছেন ফুল চাষি মহিউদ্দিন, আমির হোসেন ও রফিক। আরো অনেকেই আবাদ করেছেন ফুল।

চাষিরা জানান, আগে খাগরিয়ার অধিকাংশ জমিতে শুষ্ক মৌসুমে আলু চাষ করা হতো। ফুল চাষ অধিক লাভজনক হওয়ায় চাষিরা এখন আলু চাষের পরিবর্তে ফুল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। তারা জানান, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ফুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সাতকানিয়ার খাগরিয়ায় ফুল চাষ বছরের পর বছর বেড়ে চলেছে। চাষিরা আলু, মুলা, আখ, কপি ও শিম চাষসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ বাদ দিয়ে ফুল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। চর খাগরিয়ার কালু মিয়া চৌধুরী বাড়ির ফুলচাষি মোহাম্মদ মজিবুর রহমান জানান, তিনি পাঁচ বছর ধরে ফুল চাষ করছেন। এর আগে আলু ও আখ ক্ষেত করেছেন। বছরের পর উৎপাদনে ব্যয় আর লাভের ব্যবধান থাকত খুব কম। এলাকার অন্য ফুলচাষিদের দেখাদেখি পাঁচ বছর আগে তিনি এক খণ্ড জমিতে ফুল চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরেই ভালো লাভ হওয়ায় পরের বছর আরো অধিক জমিতে চাষ শুরু করেন। এ বছর মুজিব তিন কানি জমিতে ফুল চাষ করেছেন।
মজিব জানিয়েছেন, এ বছর তার তিন কানি জমিতে ফুল চাষ করতে ৬০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। আর এ বছর ইতোমধ্যে প্রায় ৪০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করেছেন। আশা করছেন আরো ৬০-৭০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবেন।
এলাকায় ফুল চাষকে কেন্দ্র করে অনেক নারী শ্রমিকের কর্মসংস্খান হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, এলাকার ফুল চাষ তাদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। এদের একজন মরিয়ম। তিনি জানান, এলাকায় ফুল চাষ হওয়ায় তারা ভালোভাবে কাজ করতে পারছেন। তারা আগে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কাজ করতেন। এখন ফুলের বাগানে কাজ পাওয়াতে দূরে কাজ করতে যেতে হচ্ছে না।

সূত্র : এগ্রোবাংলা

কৃষক আলা উদ্দিন ফুল চাষ করে অর্ধকোটি টাকার মালিক



লেখক: শাহনেওয়াজ খান সুমন-ঝিনাইদহ
২০ বছর আগের কথা, খালি হাতে এদেশে এসেছিলেন কৃষক আলা উদ্দিন। সাথে নিয়ে এসেছিলেন আধা কেজি ফুলের বীজ। উঠেছিলেন ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সেজিয়া গ্রামের আনসার আলীর বাড়িতে। সেখানে বেড়ারঘর বানিয়ে বসবাস শুরু করেন। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে করেন ফুলের চাষ। গড়ে তোলেন নদিয়া নার্সারী।

তার এই ফুল চাষ আজ গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেজিয়া গ্রামের ৩ শত বিঘা ছাড়াও পাশ্ববর্তী গ্রাম গুলোর শত শত বিঘা জমিতে ফুলের চাষ হচ্ছে। নার্সারী থেকে চারা নিয়ে এলাকার অনেকে বাগান বানিয়েছেন। এভাবে পরিশ্রম করে কৃষক আলা উদ্দিনও আজ অর্ধকোটি টাকার মালিক হয়েছেন।

কৃষি সাফল্য দেখতে সরেজমিনে সেজিয়া গ্রামে গেলে কথা হয় সফল কৃষক আলা উদ্দিনের সাথে। তিনি জানান, তার প্রকৃত বাড়ি ছিল ভারতের নদিয়া জেলায়। বাবা দাউদ আলী মন্ডলের আর্থিক অবস্থা খুব বেশী ভালো না হওয়ায় বেশী পড়ালেখা করতে পারেননি। অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত পড়ালেখা শেষে বেকার জীবন কাটাচ্ছিলেন। এরই মাঝে বাড়ির কাউকে কিছু না বলে আলাউদ্দিন বাংলাদেশে চলে আসেন। ১৯৯০ সালের দিকে তিনি যখন এদেশে আসেন তখন বাড়ি থেকে কিছুই আনেননি। খালি হাতে আসার সময় বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছিলেন কিছু ফুলের বীজ। যা দিয়ে তিনি অত্র এলাকায় ফুলের চাষ ছড়িয়ে দিয়েছেন।

আলা উদ্দিন জানান, এদেশে এসে তিনি প্রথমে সেজিয়া গ্রামের আনসার আলীর বাড়িতে ওঠেন। আনসার আলী তার বাড়ির পাশে একটু জায়গা দিয়েছিলেন ঘর বেঁধে থাকার জন্য। শর্ত ছিল তার ক্ষেতে কাজ করতে হবে। আলা উদ্দিন আনসার আলীর বাড়িতে কাজ করার পাশাপাশি নিজেও জমি বর্গা নিয়ে ফুল চাষ শুরু করেন। সে সময় ওই এলাকার কেউ ফুলের চাষ বুঝতো না। তিনি ফুল চাষ করবেন জেনে জমির মালিকরা প্রথম পর্যায়ে জমি বর্গা দিতে চাননি। তার অনুরোধে কয়েকজন এগিয়ে এলে শুরু হয় ফুল চাষ। আজ অত্র এলাকায় ফুল চাষ ছড়িয়ে পড়েছে।

কৃষক আলা উদ্দিন জানান, মাত্র চার বছর ফুলের চাষ করে তিনি বেশ কিছু পয়সা জমান। এরপর জায়গা কিনে সেখানে ঘর বানিয়ে বসবাস শুরু করেন। ছেড়ে দেন আনসার আলীর জায়গা। নিজের জমিতে বাড়ি বানাবার পর স্ত্রী ফাতেমা খাতুনকে নিয়ে আসেন। নিজের সংসার সাজানোর পাশাপাশি মাঠে চাষও বাড়াতে থাকেন কৃষক আলা উদ্দিন। কঠোর পরিশ্রম আর উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে আলা উদ্দিন ২০ বছরে সফলতা এনেছেন। ইতোমধ্যে সেজিয়া গ্রামে ২৫ শতক জমির উপর একতলা পাঁকা বাড়ি বানিয়েছেন। সাজানো গোছানো বাড়ির এক পাশে রয়েছে একটি পুকুর। চারিপাশে রয়েছে ফুল ও ফলের বাগান। মাঠে চাষযোগ্য আড়াই বিঘা জমি কিনেছেন। এছাড়া লিজ নিয়েছেন ২০ বিঘা জমি। যেখানে ফুল, ফলের গাছ ছাড়ার নানা চাষাবাদ রয়েছে। বর্তমানে তার ৬ বিঘা জমিতে ফুলের চাষ রয়েছে। আলা উদ্দিন জানান, ফুলের চাষ লাভজনক হলেও অনেকটা লটারীর মতো। এই চাষে কথনও লাভ আবার কখনও লোকসান হয়ে থাকে। বর্তমানে ভারত থেকে নানা জাতের ফুল আসায় এদেশের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তিনি এই ফুল চাষের তাৎক্ষনিক ক্ষতি মোকাবেলা করতে ফুলের পাশাপাশি অন্যান্য চাষাবাদ করেন বলে জানিয়েছেন।

সেজিয়া গ্রামের আলি আকবার জানান, আলা উদ্দিনের কারনে আজ তাদের এলাকায় ফুল চাষের বিস্তার ঘটেছে। এই ফুল চাষ করে অনেকে স্বাভলম্বি হয়েছে। তিনি নিজেও তিন বিঘা জমিতে ফুলের চাষ করেছেন। আলী আকবার আরো জানান, পাশ্ববর্তী ভারতে এই ফুলের চাষ হয় বলে তারা শুনতেন। এরপর আলা উদ্দিন সেখান থেকে ফুল চাষের ধারনা নিয়ে এসে তাদের অঞ্চলে ছড়িয়ে দিয়েছে। যা কৃষকের লাভবান করার পাশাপাশি দরিদ্র মহিলা ও বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।

কৃষক আলা উদ্দিন জানান, ২০০০ সালের বন্যায় তিনি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হন। সে সময় তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্ততের সহযোগীতার আশ্বাস দেন। পরে ওই সহযোগীতার টাকা পেয়ে আবার সোজা হয়ে দাড়ান কৃষক আলা উদ্দিন। বর্তমানে তার ছেলে কামাল উদ্দিন বাবার ফার্ম দেখাশুনা করছেন। ছেলেকে বি.এ পর্যন্ত পড়ানোর পর ফার্মের দায়িত্ব দিয়েছেন। দুই মেয়ে ফেরদৌসী খুতান ও কুলসুম আক্তারকে বিয়ে হয়েছে। বর্তমানে তার নদিয়া নার্সারী ও নদিয়া সীড ফার্মে সব সময় ১৫/১৬ জন কাজ করছেন। তিনি দাবি করেন সহজ শর্তে কৃষি ঋন দিলে কৃষকরা চাষ কাজে আরো এগিয়ে যেতে পারবে। তিনি নিজেও অনেক ধর্ণা দিয়ে কৃষি ঋন পাননি বলে জানিয়েছেন।

তথ্যসূত্র: দি-এডিটর

মাছ চাষে ভাগ্য ফিরিয়েছেন সাহাবুদ্দিন


প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে কঠোর পরিশ্রম ও চেষ্টা করলে অসাধ্য সাধন করা যায়। নিজের ভাগ্য বদলের পাশাপাশি অন্যদেরও ভাগ্য বদলে দেয়া যায়_ এ সত্যকে প্রমাণ করেছেন মো. সাহাবুদ্দিন। ১৯৮৯ সাল থেকে পরিশ্রম আর অক্লান্ত চেষ্টার মধ্য দিয়ে পোনা ব্যবসার পাশাপাশি মৎস্য চাষ করে তার ভাগ্য পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার মির্জাপাড়া গ্রামে তিনি একজন সফল মৎস্যচাষী হিসেবে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

সাফল্যটি সত্যি সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো। কিন্তু এই সাফল্যের আড়ালে রয়েছে এক দুঃখগাথা। মরহুম আবদুল মজিদের পুত্র সাহাবুদ্দিন শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দারিদ্র্যের কষাঘাতে প্রাইমারি ডিঙ্গাতে পারেননি। তার সংসারে অভাব-অনাটন লেগেই থাকত। কোন দিন পেট ভরে খেতে পারতেন, কোন দিন পারতেন না। কত বেলা না খেয়ে কাটিয়েছেন তার কোন হিসাব নেই। স্ত্রী সুলতানা খাতুন আর প্রথম সন্তান শাহানাজ খাতুনকে নিয়ে সংসার চালান ছিল দায়। এর মধ্যে তাদের ঘরে আসে দ্বিতীয় সন্তান। নুন আনতে যাদের পানতা ফুরায় তাদের সন্তানদের জন্য মাছ কেনার পয়সা জোগানো খুবই কঠিন কাজ। কিন্তু কন্যার মুখে মাছ তুলে দিতে বুক ফেটে যায় অথচ সাধ্য নেই কিনে খাওয়ানোর। আপন ছোট ভাইয়ের কাছে বাকিতে মাছ নিতে চাইলে অর্থ পরিশোধ করতে পারবেন না এ আশংকায় তাকে মাছ দেয়নি ছোট ভাই। ১৮ বছর আগের এ কাহিনী বলতে গিয়ে চোখ ভিজে আসে তার।

অনেক কষ্টে ধার-দেনা করে পাঁচ হাজার টাকা জোগাড় করেন। এ টাকা নিয়ে রৌমারী উপজেলার নবদাসপাড়া গ্রামের শ্রী ভবেশনাথ মাঝিকে সঙ্গে নিয়ে বগুড়া জেলার কাহালু থানা থেকে ১০/১২ কেজি মাছের রেণু পোনা কিনে এনে রৌমারী বাজারে তা বিক্রি করেন। একসময় মৎস্য অফিসসহ বিভিন্ন এনজিওতে প্রশিক্ষণ নিয়ে মাছ চাষে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। কাজের মধ্য দিয়ে সেই থেকে সাহাবুদ্দিনের নতুন জীবনযাত্রা শুরু হয়। এতে তার সংসারে বাড়তি আয়ের ছোঁয়া লাগে, পরিবর্তন আসে জীবনে। ছেলেমেয়েদের ভর্তি করা হয় স্কুলে।

বর্তমানে তার ৫/৬ বিঘা জমি ক্রয়। ৪টি হাফবিল্ডিং, ১টি মোটরগাড়ি, গাভী সংখ্যা ৪টি, পুকুর ১৬টি, লিজকৃত দুটি নিজস্ব এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার ব্যবসায় রয়েছে। আর্থিক সচ্ছলতা আসায় সমাজে তার মর্যাদা বেড়েছে। পরিবারের যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে মূল্যায়ন করা হয় তাকে। সমাজে সবাই তাকে লাখোপতি/কালো মাঝি বলে ডাকে যা শুনতে তার খুবই ভালো লাগে।
তিনি বড় মাছ উৎপাদন করে রৌমারী উপজেলা মৎস্য অফিস কতৃর্ক অনেকবার শ্রেষ্ঠ পুরস্কারও পেয়েছেন। মাছ চাষ করতে প্রতি মাসে ১৬ হাজার টাকা ব্যয় হয় তার। মাসে তিনি আয় করেন ৫০ হাজার টাকা। তার মাছ বাজারে গিয়ে বিক্রি করতে হয় না। মাছ ব্যবসায়ীরা জলাশয়ে গিয়ে মাছ ক্রয় করে নিয়ে যায়। তিনি তাদের কাছে প্রতিদিন ৫/৬ মণ মাছ বিক্রি করে থাকেন। রৌমারীর সাহাবুদ্দিন ৫০-৬০ জন শ্রমিকের সঙ্গে রাত-দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে মৎস্য চাষ করে আসছেন। ১৯৮৯ সাল থেকে তিনি মৎস্য চাষ করে আসছেন। তার সাফল্য দেখে আশপাশের ৫০ প্রতিবেশীও মৎস্য খামার গড়ে তুলতে শুরু করেছেন। তার এক ভাই মতিয়ার মৎস্য খামার গড়ে তুলেছেন। তার রয়েছে ৩টি খামার। তিনি প্রতিমাসে ৪০/৫০ হাজার টাকা আয় করেন। এক সময় তারও তেমন কিছু ছিল না। মৎস্য খামার গড়ে তিনি ভাগ্য ফিরিয়েছেন। তিনি বলেন, হতদরিদ্র ও বেকার যুবকরা অল্পপুঁজি খাটিয়ে এ ব্যবসা করে ব্যাপক উন্নতি করতে পারেন। মৎস্য খামার করে তিনি যেন প্রতি মাসে ৪০/৫০ হাজার টাকা আয় করেছেন। খুব সহজেই বেকাররা এ পরিমাণ আয় করে স্বাবলম্বী হতে পারেন। তিনি আরও বলেন, বেকার যুবকদের মৎস্য খামার করায় উৎসাহ দিতে ব্যাংকগুলো সুদমুক্ত ঋণ দিলে এ অঞ্চলের বেকার যুবকরা দ্রুত স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। তিনি আশা করেন, ব্যাংকগুলো এ ধরনের ঋণ সুবিধা চালু করে বেকারত্ব কমাতে সহযোগিতা করবে।

তথ্য সূত্র: দৈনিক যুগান্তর

নার্সারি গ্রাম বুড়িয়ারডাঙ্গা


এ গ্রামের মানুষ অন্য গ্রামে আত্নীয়স্বজনের বাসায় বেড়াতে গেলে ফুল বা ফলের গাছের চারা সঙ্গে করে নিয়ে যান। আত্দীয়স্বজন একবাঙ্ মিষ্টির চেয়ে একটি ফুল বা ফল গাছের চারা উপহার পেলে বেশি খুশি হয়।
খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার একটি ছোট গ্রাম বুড়িয়ারডাঙ্গা। গ্রামটি যশোর-খুলনা মহাসড়ক লাগোয়া। এ মহাসড়কের পাশেই রয়েছে গাছের চারা বিক্রির সারি সারি দোকান। চমৎকার তাদের নাম।

নানা প্রকার গাছ-গাছালির ঘেরাটোপে বন্দি গ্রামটি। এদেশের আর দশটি গ্রামের মতোই চিরসবুজ চিরশান্ত। বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই গ্রামটির বিশেষত্ব। গ্রামে ঢোকার পথ রয়েছে বেশক'টি। তার যে কোনও একটি দিয়ে প্রবেশ করলে চোখে পড়বে গ্রামটির বৈশিষ্ট্য। এ গ্রামের প্রতিটি বাড়ির উঠানে, আঙিনায় ও ক্ষেত-খামারে গড়ে উঠেছে নার্সারি। এ পথ দিয়ে যতদূর যাওয়া যায়, যতদূর দেখা যায় চোখে পড়ে শুধু নার্সারি আর নার্সারি। আরও দেখা যায়, কোনও কোনও নার্সারির মাঝখানে গোলপাতার তৈরি ঘরের নিচে বসে কৃষি মজুররা বিশ্রাম নিচ্ছে, কেউ কেউ জমি নিড়াচ্ছে। গ্রামটির নাম বুড়িয়ারডাঙ্গা। স্থানীয় লোকজন বলে নার্সারি গ্রাম। এ বিচিত্র গ্রামের বেশিরভাগ লোকই কোনও না কোনওভাবে নার্সারি পেশার সঙ্গে যুক্ত। নার্সারির কারণেই এ গ্রামের সব মানুষের ভাগ্য বদলে গেছে। গ্রামটিও ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে।

খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার একটি ছোট গ্রাম বুড়িয়ারডাঙ্গা। গ্রামটি যশোর-খুলনা মহাসড়ক লাগোয়া। এ মহাসড়কের পাশেই রয়েছে গাছের চারা বিক্রির সারি সারি দোকান। চমৎকার তাদের নাম। এসব দোকানের পেছনেই রয়েছে গ্রামটি। এ গ্রামের লোকজনের যার যতটুকু জমি আছে, তার মধ্যে তারা গড়ে তুলেছে নার্সারি। যারা চাকরি বা অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত তারাও অবসর সময়ে নার্সারি পরিচর্যা করে। এ গ্রামে নার্সারি গড়ার পেছনে রয়েছে ছোট এক ইতিহাস। শেখ আবু বক্কর নামের এ গ্রামের এক লোক ব্রিটিশ আমলে কলকাতায় চাকরি করতেন। তিনি একবার বাড়ি ফেরার সময় শখ করে কলকাতা থেকে গোলাপ ফুল গাছের একটি চারা এনে বাড়ির উঠানে লাগান। কিছুদিন পরই গাছটিতে অভাবনীয় ফুল ধরে। এতে তিনি ভীষণ উৎসাহিত হন এবং প্রতিবার ছুটিতে বাড়ি ফিরে আসার সময় নানা জাতের ফুল, ফল ও ঔষধি গাছের চারা এনে লাগিয়ে একই ফল পান। শেখ আবু বক্করের এ সাফল্যের কথা সারা গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। তার প্রতিবেশী এবং আত্দীয়স্বজন এসে তার কাছ থেকে চারা ও বীজ সংগ্রহ করে নিজেদের উঠানে ও বাগানে লাগিয়ে ব্যাপক সাফল্য পায়। তবে প্রথমদিকে সবাই শখের বশেই ফুল-ফল গাছের চারা লাগাত। কিন্তু দিন দিন এসব গাছের চারা ও বীজের চাহিদা বেড়ে গেলে কেউ কেউ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করে। গাছের চারা উৎপাদন লাভজনক হওয়ায় বুড়িয়ারডাঙ্গা গ্রামের প্রায় সবাই এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। যার যতটুকু জমি আছে, তার মধ্যেই নার্সারি গড়ে তোলে। ধীরে ধীরে পুরো গ্রামের চেহারা যায় পাল্টে।

ফুলতলার বুড়িয়ারডাঙ্গা গ্রামে নার্সারি গড়ে ওঠার মূল কারণটি হচ্ছে এখানকার মাটি। এ গ্রামের মাটির গুণ এমনই যে, যে কোনও গাছের চারা লাগালেই তা কিশোরীর শরীরের ন্যায় লকলকিয়ে বেড়ে ওঠে। আর ভালো জাতের বীজ বা চারা রোপণ করলে তার ফলন হয় আরও বেশি। এ গ্রামের মাটির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে দো-আঁশযুক্ত এবং উঁচু। বন্যা অথবা অতিবৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে না। বৃষ্টির পানিতে এখানকার মাটি পিচ্ছল বা কাদা হয় না। আবার প্রচণ্ড খরায় মাটির রস শুকিয়ে যায় না। মাটির এতসব গুণের কারণেই এখানে সব ধরনের গাছের কলম ভালো হয়।

এ গ্রামের নার্সারিগুলোতে এখন সব ধরনের গাছের চারা উৎপাদন হয়। সাধারণ ও হাইব্রিড উভয় জাতের ফুল, ফল, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ফুল গাছের চারা। ফুল গাছের চারার মধ্যে রয়েছে গোলাপ, ডালিয়া, শিউলি, রক্তজবা, সাদা জবা, নীলকণ্ঠ, মালতি, রক্তকরবী, পলাশ, জিনিয়া, কনকচাঁপা, গাঁদা, রজনীগন্ধা, গন্ধরাজ, নাইট কুইন, চন্দ্র মল্লিকা, শিমূল, বকুল প্রভৃতি। এখানকার নার্সারিগুলোতে শুধু শতাধিক প্রকারের গোলাপ ফুল গাছের চারা উৎপাদন হয়। বিশ্বের প্রায় সব দেশের গোলাপই এখানকার নার্সারিগুলোতে পাওয়া যায়।

নানা রকমের ফল গাছের চারা উৎপাদনের জন্যও এ গ্রামটি বিখ্যাত। আম, জাম, কাঁঠাল, নিচু, আঙ্গুর, খেজুর, নারিকেল, বরই, আমড়া, সফেদা, কামরাঙ্গা, জলপাই, লটকন প্রভৃতি জাতের ফলের গাছের চারা এখানে পাওয়া যায়। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় আম গাছের চারা। বিভিন্ন জাতের ও নামের আম গাছের চারাই উৎপাদন হয় দু'ডজনের উপরে। এরপর বিক্রি হয় নারিকেল গাছের চারা। বিভিন্ন প্রকার ঔষধি ও বনজ গাছের চারাও এখানে উৎপাদন হয়। এসব গাছের মধ্যে রয়েছে আমলকী, হরিতকী, বহেরা, নিম, তুলসী, বাসক, নিসিন্দা, অজুর্ন, অশোক ইত্যাদি। বনজ গাছের চারার মধ্যে আছে ঝাউ, বট, মেহগনি, শিরিষ, দেবদারু, গোলপাতা, পাতাবাহার, করই, হিজল, তমাল, হেতাল ইত্যাদি। একাধিক প্রকার বটগাছের চারা এখানে উৎপাদন হয়। এসব গাছের চারা ছাড়াও লেবু, বাতাবি লেবু, নাশপাতির চারাসহ বহু বিচিত্র গাছের চারাও এখানকার নার্সারিগুলোতে উৎপাদন হয়।

বুড়িয়ারডাঙ্গা গ্রামের নার্সারির মালিকরা নানা উৎস থেকে ভালো জাতের ফুল, ফল ও ঔষধি গাছের বীজ সংগ্রহ করেন। তারা প্রয়োজনে ইউরোপ, আমেরিকা, চীন, ভারত, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশ থেকে ভালো জাতের ফুল ও ফল গাছের বীজ সংগ্রহ করেন। মাটি ভালোমতো পরিচর্যা করে সার ও খৈল মিশিয়ে তারপর বীজ রোপণ করা হয়। বীজ ও চারাকে যাতে পোকামাকড় থেকে মুক্ত রাখা যায় তার জন্য কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করা হয়। প্রত্যেক জাতের ফুল ও ফল গাছের জন্য আলাদা আলাদা বীজতলা তৈরি করা হয়। চারা একটু বড় হলেই বিক্রি শুরু হয়। যশোর-খুলনা মহাসড়কের পাশে প্রত্যেক নার্সারির বিক্রয় কেন্দ্র আছে। সেখানেই চারা বিক্রি করা হয়। সবচেয়ে বেশি চারাগাছ বিক্রি হয় বর্ষকালে। তাই এখন নার্সারিগুলোতে সাজসাজ রব। তবে এখানকার নার্সারিগুলোতে সারাবছরই চারা উৎপাদন ও বিক্রি হয়।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা খুলনার এই ছোট শ্যামল গ্রামটিতে রয়েছে দু'শতাধিক নার্সারি। প্রত্যেক নার্সারিতে গড়ে ৫-৭ জন কৃষি মজুর কাজ করে। কিছু মজুর এ গ্রামের অধিবাসী। বাকিরা বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মজুর। তিনবেলা খাবার দিয়ে প্রত্যেক মজুরকে দৈনিক ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিক দিতে হয়। তারপরও নার্সারিগুলো ভালো ব্যবসা করে। পাইকারি ও খুচরা উভয়ভাবে এখানে চারা বিক্রি হয়। গাছের চারা ১০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। গ্রামটির অবস্থানগত কারণে খুব সহজে এখান থেকে দেশের যে কোনও স্থানে ট্রাকে করে চারা পাঠানো যায়। এখানকার নার্সারি থেকে ব্যবসায়ীরা চারা কিনে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের হাটবাজার এবং মেলায় বিক্রি করে। এ পথ দিয়ে যাতায়াতকারী বিভিন্ন পেশার মানুষ গাড়ি কিংবা ভ্যানে করে চারা কিনে নিয়ে যায়।

বুড়িয়ারডাঙ্গা গ্রামের মানুষের একান্ত নিজস্ব উদ্যোগে এ নার্সারি শিল্প গড়ে উঠেছে। দেশে পরিবেশ রক্ষায় ও বৃক্ষায়নে এ গ্রামের নার্সারিগুলো ব্যাপক অবদান রেখে চলেছে। কোনও কোনও নার্সারির মালিক সরকার কতৃর্ক পুরস্কারও পেয়েছেন। বাবুল হাসান, মনিরুল, ওহিদুলের মতো বেকার যুবকরা নিঃস্ব অবস্থা থেকে নার্সারির বিনিময়ে আজকে লাখোপতি হয়েছে। এ গ্রামে কোনও বেকার নেই। কোনও নিরক্ষর লোকও নেই। এ গ্রামের মানুষ অন্য গ্রামে আত্দীয়স্বজনের বাসায় বেড়াতে গেলে ফুল বা ফলের গাছের চারা সঙ্গে করে নিয়ে যান। আত্দীয়স্বজনরা একবাঙ্ মিষ্টির চেয়ে এ গ্রামের একটি ফুল বা ফল গাছের চারা উপহার পেলে বেশি খুশি হয়।

তথ্য সূত্র: দৈনিক যুগান্তর

বাংলাদেশের চাকরীদাতা সাইটগুলোর লিংক একনজরে


বাংলাদেশের চাকরীদাতা সাইটগুলোর লিংক একনজরে দেখুন নিচে এবং আপনার প্রয়োজন অনুসারে বেছে নিন যেকোনটি। আপনার সংগ্রহে কোন সাইট থাকলে নীচে কমেন্ট আকারে উল্লেখ করতে পারেন। লিস্টে যোগ করে দিব। ধন্যবাদ।

www.bdjobs.com

www.jobsa1.com


www.prothom-alojobs.com


www.ahsaniajobs.com


www.alljobsbd.com


www.amarcareer.com


www.cellbazaar.com/jobs


www.deshijob.com


www.jobpan.com


www.chakri.com.bd


www.bdjobstoday.com


www.jobsbd.com


www.aiminlife.com


www.jobsinbd.com


www.jobstreet.com


www.jobsdiary.com


www.edengardenbd.com


www.cyberjob.com.bd


www.jeebika.com.bd


www.azadijobs.com


www.my.jobsdb.com/my

হাসঁ পালনই ফিরিয়ে এনেছে কাঞ্চনের মুখের হাসি


লেখক: দিলীপ কুমার সাহা
স্ত্রীর এক ভরি ওজনের স্বর্ণের হার বিক্রি করে ৫০টি হাঁস কিনে পালন শুরু করেন কাঞ্চন মিয়া। এসব হাঁসের ডিম বিক্রি করে জমানো ২০ হাজার টাকায় পরে তিনি সিলেটের মারকুলি থেকে ৩০০ হাঁস কেনেন। হাঁস পালনের জন্য গ্রামের সোয়াইজনি নদীর পারে গড়ে তোলেন অস্থায়ী খামার। এটি ১৯৯০ সালের কথা।

আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি কিশোরগঞ্জের হাওরবেষ্টিত উপজেলা নিকলীর নগর গ্রামের বাসিন্দা কাঞ্চন মিয়াকে। হাঁস পালন ভাগ্য বদলে দিয়েছে তাঁর। বর্তমানে তাঁর খামারে হাঁসের সংখ্যা দুই হাজার। আট হাজার টাকা মূলধন নিয়ে শুরু করা কাঞ্চনের এখন প্রতিদিন ডিম বিক্রি করেই আয় আট হাজার টাকা। তাঁকে দেখে উৎসাহিত হয়ে আরও অনেকে নদীর পারে অস্থায়ী খামার করেছেন। বদলেছেন দিন। অভাব দূর করে হয়েছেন সচ্ছল। অভাবের কারণে একসময় বিষন্ন থাকা মুখে এসেছে হাসি।

বর্তমানে নিকলীর ওপর দিয়ে বয়ে চলা নরসুন্দা, সোয়াইজনি, ঘোড়াউত্রা ও ধনু নদীর পারে হাঁসের অস্থায়ী খামার রয়েছে চার শতাধিক, যা কয়েক শ পরিবারকে করেছে সচ্ছল। এসব খামারকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা হাঁসের খাদ্য শামুক এবং হাঁসের ডিম বিক্রির ব্যবসা উপার্জনের পথ করেছে আরও কয়েক শ মানুষের।

যেভাবে শুরু: সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮৫ সালে উপজেলার মঞ্জিলহাটি গ্রামের রহিম, নগর গ্রামের ইসরাইল ও আলী হোসেন তাঁদের বাড়িতে ৪০-৫০টি করে হাঁস পালন শুরু করেন। হাঁসের ডিম বিক্রি করে তাঁদের আয়ও হচ্ছিল ভালোই। হঠাৎ ‘ডাকপ্লেগ’ রোগে হাঁসগুলোর মৃত্যু তাঁদের হতাশ করে। কিন্তু তাঁদের হাঁস পালন উৎসাহিত করে কাঞ্চন মিয়াকে। তাঁর সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়েছেন অন্যরা। কাঞ্চন মিয়া বলেন, একসময় মানুষের জমিতে কামলা দিয়ে সংসার চালাতে হতো। এখন আমি সচ্ছল। আমি পড়াশোনা করতে পারিনি। কিন্তু তিন ছেলেমেয়েকে স্কুলে পড়াচ্ছি।

নিকলীতে নদীর পারে গেলে দেখা যায় হাঁসের অসংখ্য অস্থায়ী খামার। কোনো খামারে ৫০০টি, কোনোটিতে এক হাজার এবং কোনোটিতে এর চেয়ে বেশি হাঁস রয়েছে। খামারগুলোর হাঁস দিনে নদীতে থাকে, নদী থেকে খাবার সংগ্রহ করে খায়। ছোট ছোট নৌকায় করে একজন বা দুজন হাঁসগুলোর ওপর নজরদারি করে। খামারিরা জানান, সন্ধ্যা হলে খামারের লোকজন হাঁসগুলোকে তাড়িয়ে বাঁশের বেড়ায় তৈরি অস্থায়ী খামারে নিয়ে যান। হাঁস ও ডিম চুরি ঠেকাতে রাতে কাছাকাছি তৈরি করা মাচায় থাকে খামারের লোকজন। দেখাশোনার জন্য প্রতিটি খামারে দু-তিনজন লোক রয়েছে।

খামারিরা জানান, অন্য এলাকার খামারগুলোতে হাঁসের খাবারের পেছনেই লাভের বড় একটা অংশ চলে যায়। নদীতে পর্যাপ্ত খাবার পাওয়া যায় বলে তাঁদের হাঁসের জন্য খাবার প্রায় কিনতেই হয় না। মাঝেমধ্যে তাঁরা শামুক কিনে হাঁসকে খাওয়ান। উন্মুক্ত পরিবেশে থাকায় ও প্রাকৃতিক খাবার পাওয়ায় এসব হাঁস অন্য এলাকার হাঁসের চেয়ে বেশি দিন ধরে ও বেশি ডিম দেয়। তাই তাঁদের খামারে লাভ বেশি। তাঁরা জানান, নদীর এক স্থানে খাবার ফুরিয়ে গেলে তাঁরা হাঁস ও অস্থায়ী খামারসহ নদীর অন্য স্থানে চলে যান। বর্ষাকালে নদীর পার পানিতে তলিয়ে গেলে খামারিরা হাঁসগুলো নিজেদের বাড়ি ও আশপাশে নিয়ে আসেন। এ সময় হাঁসের পুরো খাবার কিনতে হয় বলে খামারিদের লাভ কমে যায়। বদ্ধ পরিবেশের কারণে হাঁসের ডিম দেওয়ার ক্ষমতাও কমে যায়। বর্ষার পানি কিছু কমলেই খামারিরা হাঁস নিয়ে আবার নদীর পারে অস্থায়ী খামারে চলে যান। খামারিদের তথ্যানুযায়ী, এক হাজার হাঁসের একটি খামারে প্রতিদিন গড়ে ৯০০ ডিম হয়। এতে সব খরচ বাদ দিয়ে দৈনিক কমপক্ষে চার হাজার টাকা আয় হয়।

ভাগ্য বদলেছে যাঁদের: মহরকোনা গ্রামের জিল্লু মিয়ার (৩৫) চলতে হতো ধারদেনা করে। ১০ বছর আগে স্বজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ৩৫০টি হাঁস দিয়ে খামার শুরু করেন তিনি। বর্তমানে তাঁর খামারে তিন হাজার হাঁস রয়েছে। এই খামারের আয় দিয়ে তিনি হাওরে ১৫ একর জমি কিনেছেন। তিনি বলেন, ‘হাঁস পালনই আমাকে সুদিন এনে দিয়েছে।’ হাঁসের খামার করে তাঁর মতো দারিদ্র্যকে জয় করেছেন আয়ুব আলী (৬৫), আবু কালাম (৩৫), সাইফুল (৩০), গিয়াস উদ্দিন (৫০), আলী ইসলাম (৪০), নূরু ইসলাম (৪২), নাসু মাঝি (৩৮), সোনালী (৩৫), করম আলী (৩০), উসমান (৩২), কুদ্দুস মিয়াসহ (৩৬) আরও অনেকে।
তিন বছর আগে ১৮ জন হাঁসের খামারি নিকলী নতুন বাজারে গড়ে তোলেন ‘হাঁস সমিতি’। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করে সমিতির সাধারণ সম্পাদক করম আলী বলেন, খামারে হাঁসের রোগ দেখা দিলে টাকা দিয়ে চিকিৎসক আনতে হয়। ওষুধও পাওয়া যায় না।

হাঁসের খাবারের জন্য খামারিরা প্রতি খাঁচা শামুক কেনেন ১০ টাকা করে। নদী থেকে এই শামুক ধরে খামারিদের কাছে বিক্রি করে সংসারের অভাব দূর করেছেন হারুন, দেনু, মাহবুব ও বাহার উদ্দিনসহ অনেকে। তাঁরা জানান, নিকলীতে শামুক শিকার করা দুই শতাধিক নৌকা রয়েছে। প্রতি নৌকায় থাকে তিনজন।
নিকলীর খামারগুলোর ডিম স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীতে যায়। ডিম ব্যবসায়ী করিম, বিল্লাল, নাছির, আলাউদ্দিন ও করম আলী জানান, তাঁরা প্রতিদিন ঢাকার ঠাটারীবাজারের বিভিন্ন আড়তে প্রায় দুই লাখ ডিম বিক্রি করেন। এতে তাঁদের কর্মসংস্থান হয়েছে।

জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের বক্তব্য: নিকলী উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কারার বুরহান উদ্দিন বলেন, ‘নিকলীর নদীর পারগুলোতে যেভাবে হাঁসের খামার গড়ে উঠেছে তা দেখে খুব ভালো লাগে। শুধু সদর ইউনিয়নেই খামার আছে দুই শতাধিক।’ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এম এ জলিল বলেন, ওষুধের সরবরাহ কম থাকায় খামারিদের ওষুধ দিতে পারি না। লোকবল কম থাকায় ঠিকমতো খামারগুলো পরিদর্শন করাও সম্ভব হয়ে ওঠে না।
নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পর্যাপ্ত ওষুধ না থাকায় খামারিদের অসুবিধার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।


সূত্র : এগ্রোবাংলা

ফুল চাষে সাভারের তিন গ্রামের ভাগ্যবদল

ছবি: নাজমুল হাসান


লেখক: মো. শরিফুল ইসলাম
কৃষিকাজের বদলে ফুল চাষকে পেশা হিসেবে নিয়ে ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন সাভারের অনেক কৃষক। সাভারের সাদুল্লাহপুর, শ্যামপুর, রাজাসন গ্রামের প্রায় প্রতিটি পরিবার ফুলচাষের সাথে যুক্ত। এখানে উৎপাদিত গোলাপ, গ্যালোটিলাস ফুলের ওপর নির্ভর করতে হয় শাহবাগের ফুলবাজারসহ দেশের ফুল ব্যবসায়ীদের। দিন দিন এখানকার ফুলের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সাভারের জমি আশপাশের জমি থেকে উঁচু হওয়ায় ফসলের চেয়ে ফুল চাষ ভালো হয়। ফসলে সময়, শ্রম অনেক বেশি দিতে হয়, সে তুলনায় ফুল চাষে কম সময় লাগে। এজন্য দিন দিন সাভারে ফুল চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগে যেখানে তিন বেলার ভাত জোগাতে সবাই ধান চাষ করত, সেখানে এখন তিন বেলা ভাতের পাশাপাশি বাড়তি স্বাচ্ছন্দ্য পেতে চাষিরা বেছে নিচ্ছেন ফুল চাষ। সাদুল্লাহপুরের কৃষক নূরুল আমিন বাংলানিউজকে বললেন, আগে কৃষিকাজ করতাম কিন্তু লাভ কম। এক পাখি (৩০ শতাংশ) জমিতে ধান হতো ১৫ থেকে ২০ মণ। খরচ পড়ত ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। ধানের দর ভালো না হলে লসও হতো। কিন্তু ফুলচাষে মাত্র একবার বিনিয়োগ করতে হয়। কিন্তু এক থেকে দেড় বছরের ভেতর বিনিয়োগের টাকা উঠে আসে। এরপরের ১০ থেকে ১২ বছর শুধু লাভ।

ফুল চাষের আরেকটি সুবিধা, গাছে ফুল ধরার পর প্রতিদিনই কৃষকদের হাতে টাকা আসে। চাষ করার পর শুধু গাছে ফুল আসা পর্যন্তই যা অপেক্ষা। আর মাত্র দেড় বছরের ভেতর বিনিয়োগের টাকা উঠে আসায় অনেকেই এখন ফুল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। মিরপুরের আরমান মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমার ১০০ বিঘার ওপর জমিতে ফুল চাষ হয়। নিজের কিছু জমি ছাড়া বাকি জমি লিজে নেওয়া। গোলাপ চাষে জমি লিজ নিতে হয় অন্তত ৫ বছরের আর গ্যালোটিলাস ফুলের জন্য লিজ নিতে হয় ১ বছরের জন্য।

গোলাপ ফুলের পৌনে চারশ জাত আছে। বাংলাদেশে ৬-৭টি জাতের চাষ হয়। এর ভেতর বড় গোলাপ হলো মেরিন্ডা, ছোট সাইজের চাম্পা গোলাপ, গন্ধ বেশি পাপা মিলনে আর দীর্ঘদিন স্থায়ী গোলাপ হল লিংকন। এছাড়া সাদা, লাল, হলুদ রঙের গোলাপ চাষ হয়। সাভারের সাদুল্লাহপুর ও শ্যামপুরের কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে এ গোলাপ চাষ করছেন। তবে রাজাসন গ্রামে অন্য ফুলের চেয়ে গ্যালোটিলাস বেশি চাষ হয়। এখানে সাদা, পিংক, হলুদ, বেগুনি, কমলা, বিস্কুট ও নীল রঙের গ্যালোটিলাসের চাষ হয় বলে জানান আরমান মিয়া। তিনি বলেন, ফুল চাষে বিঘাপ্রতি বছরে টাকা দিতে হয় ৫ হাজার। গোলাপ ফুল চাষে শতকরা ৫০ ভাগ টাকা জমিমালিককে অগ্রিম দিতে হয়। বাকি টাকা এক-দুই কিস্তিতে দিতে হয়।

সারা বছর ফুল চাষ করা হলেও ফুলের বাজার জমজমাট হয়ে ওঠে শীত মৌসুমে। প্রতি বছর ভাদ্র (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) মাসে গাছের ডাল কাটা হয় আর শীতের আগে গাছে চলে আসে নতুন ফুল। শ্যামপুরের সেলিম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, শীতের সময় ফুল চাষে একটা ধড় (প্রচুর ফুল) আসে। এ সময় ফুলের দামও বেশি থাকে। আমরা প্রতিদিন ৫-৬ বান্ডিল (১ বান্ডিলে ৩০০ ফুল) ফুল পাই। অন্য সময় যা ২-৩ বান্ডিলে নেমে আসে।

তিনি আরো বলেন, ফুলের দাম সবচে বেশি থাকে ভ্যালেন্টাইন ডেতে। এ সময় বান্ডিল বিক্রি হয় ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। এরপর পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুনসহ বিভিন্ন দিবসেও ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বান্ডিল বিক্রি হয়। তবে অফ সিজনে বান্ডিল বিক্রি হয় ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়। এজন্য অনেক কৃষক বিভিন্ন দিবসকে টার্গেট করে ফুলের চাষ বেশি করেন।

বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ এখনো আমাদের বেশ নতুন বিষয়। তাই মাঝে মাঝেই কৃষকদের সমস্যায় পড়তে হয়। উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে ফুল চাষকে লাভজনক খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব বলে মনে করেন আরমান মিয়া। তিনি বলেন, আমাদের কোনও প্রশিক্ষণ নেই, কাজ করতে করতে শিখেছি। যেসব কৃষি অফিসার এখানে আছেন, তাদের কাছ থেকে ধান চাষের বিষয়ে যত সাহায্য পাওয়া যায় ফুল বিষয়ে তত সাহায্য পাওয়া যায় না। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেলে ফুল চাষে প্রচুর লাভ করার সুযোগ আছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের এখানে এক্সপোর্ট কোয়ালিটি ফুল চাষ হয় না। এক্সপোর্ট কোয়ালিটি ফুল করতে হলে স্টিক বড় করে কাটতে হয়। এতে গাছের ক্ষতি হয়। গ্রিন হাউস শেডে ফুল চাষ করলে স্টিক বড় হয়। ব্যাংক নামমাত্র টাকা আমাদের দেয়। অথচ বড় কোনও বিনিয়োগ ছাড়া শেড তৈরি সম্ভব না। পর্যাপ্ত সহায়তা পেলে এখানকার ফুল দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি সম্ভব বলে মনে করেন ফুলচাষিরা।


সূত্র: এগ্রোবাংলা

মিডিয়াতে কৃষি তথ্য ও অনুষ্ঠানমালা

টেলিভিশন মিডিয়া

বাংলাদেশ টেলিভিশন

মাটি ও মানুষ (কৃষি উন্নয়ন ভিত্তিক অনুষ্ঠান) - প্রচারিত হয় প্রতি রবিবার সন্ধ্যা ৭:০০ টায়
কৃষি দিবানিশি (প্যাকেজ) - প্রচারিত হয় প্রতি সোমবার সন্ধ্যা ৭:০০ টায়
মাটি ও মানুষ (কৃষি উন্নয়ন ভিত্তিক অনুষ্ঠান) - প্রচারিত হয়প্রতি মঙ্গলবার দুপুর ১:৩০ টায়
কৃষি দিবানিশি (প্যাকেজ) - পুন: প্রচারিত হয় প্রতি মঙ্গলবার বিকাল ৫:৩০ টায়
মাটি ও মানুষ (কৃষি উন্নয়ন ভিত্তিক অনুষ্ঠান) - প্রচারিত হয় প্রতি বুধবার সন্ধ্যা ৭:০০ টায়
মাটি ও মানুষ (কৃষি উন্নয়ন ভিত্তিক অনুষ্ঠান) - পুন: প্রচারিত হয় প্রতি শুক্রবার সন্ধ্যা ৭:০০ টায়

চ্যানেল আই

কৃষি সংবাদ - প্রচারিত হয় প্রতিদিন বিকাল ৫:২০ টায়
হৃদয়ে মাটি ও মানুষ - প্রচারিত হয় প্রতি শনিবার রাত ৯:৩৫ টায়
হৃদয়ে মাটি ও মানুষ - পুন: প্রচারিত হয় প্রতি রবিবার সকাল ১১:৩০ টায়
হৃদয়ে মাটি ও মানুষের ডাক - প্রচারিত হয় প্রতি বৃহস্পতিবার বিকাল ৩:০৫ টায়

বাংলা ভিশন

শ্যামল বাংলা - প্রচারিত হয় প্রতি শনিবার সকাল ১০:১০ টায়
শ্যামল বাংলা - প্রচারিত হয় প্রতি সোমবার সন্ধ্যা ৬:৫০ টায়
শ্যামল বাংলা - প্রচারিত হয় প্রতি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬:২০ টায়
শ্যামল বাংলা - প্রচারিত হয় প্রতি শুক্রবার সকাল ৮:৩০ টায়

বৈশাখী টেলিভিশন

কৃষি ও জীবন - প্রচারিত হয় প্রতি রবিবার রাত ৮:২০ টায়

দিগন্ত টেলিভিশন

সুফলা বাংলাদেশ - প্রচারিত হয় প্রতি রবিবার রাত ৮:০৫ টায়

ইসলামিক টেলিভিশন

সবুজ বিপ্লব - প্রচারিত হয় প্রতি মাসের চতুর্থ সপ্তাহে বেলা ১১ টায়

প্রিন্ট মিডিয়া

দৈনিক ইত্তেফাক কৃষি বিষয়ক ফিচার পাতা - মাটি ও মানুষের কৃষি – প্রকাশিত হয় প্রতি রবিবার

দৈনিক নয়াদিগন্ত কৃষি বিষয়ক ফিচার পাতা – চাষাবাদ – প্রকাশিত হয় প্রতি শনিবার

দৈনিক ডেসটিনি কৃষি বিষয়ক ফিচার পাতা - কৃষি ও পরিবেশ- প্রকাশিত হয় প্রতি বুধবার

দৈনিক আমার দেশ কৃষি বিষয়ক ফিচার পাতা –চাষবাস - প্রকাশিত হয় প্রতি সোমবার

দৈনিক যুগান্তুর কৃষি বিষয়ক ফিচার পাতা - আলোর ইশারা- প্রকাশিত হয় প্রতি সোমবার

দৈনিক প্রথম আলো এই পত্রিকায় এখন কৃষি বিষয়ক নিয়মিত কোন ফিচার পাতা না থাকলেও প্রায়ই কৃষি বিষয়ক গুরুত্বপুর্ন অনেক প্রতিবেদন ছাপা হয়।

দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন কৃষি বিষয়ক ফিচার পাতা – কৃষি ও উন্নয়ন- প্রকাশিত হয় পাক্ষিক শনিবার
এ দৈনিকে এগ্রোবাংলা থেকে সংগৃহীত কৃষি সংবাদ নিয়মিত প্রকাশ হয়, তাই জানতে চোখ রাখুন

কৃষি বিষয়ক ওয়েবসাইট

এগ্রোবাংলা ডটকম কৃষি বিষয়ক সর্ববৃহৎ তথ্য ভিত্তিক সাইট
URL: http://www.agrobangla.com

এআইএস ডট গব ডট বিডি বাংলাদেশ সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিস
URL: http://www.ais.gov.bd

বাংলাদেশএগ্রি ডটকম কৃষি তথ্যভিত্তিক ওয়েব সাইট
URL: http://bangladeshagri.com

রুরালইনফোবিডি ডটকম কৃষি তথ্যভিত্তিক ওয়েব সাইট
URL: http://www.ruralinfobd.com

জীয়ন ডটকম এতে অন্য তথ্যের পাশাপাশি কৃষি ভিত্তিক তথ্য ও আছে
URL: http://www.jeeon.com.bd

কৃষিবাংলা ডট কম কৃষি বিষয়ক তথ্যভিত্তিক ওয়েব সাইট
URL: http://www.krishibangla.com

কৃষিমার্কেট ডটকম কৃষি পন্য ক্রয়-বিক্রয় সম্পর্কিত
URL: http://www.krishimarket.com

মাটির কথা পশ্চিম বঙ্গের কৃষি বিষয়ক ওয়েব সাইট
URL: http://banglarkrishi.nic.in

বিডিফিশ ডট ইনফো মৎস্য বিষয়ক তথ্যভিত্তিক ওয়েব সাইট
URL: http://www.bdfish.info/bangla

ই-কৃষক গ্রামীণ ফোন কমিউনিটি ইনফরমেশন সেন্টারের সাইট
URL: http://www.ekrishok.com

এমওএ ডট গব ডট বিডি কৃষি মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইট
URL: http://www.moa.gov.bd

বিএডিসি ডট গব ডট বিডি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) ওয়েবসাইট
URL: http://www.badc.gov.bd

নলেজব্যাংক-বাড়ি ডট ওর্গ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাইট
URL: http://www.knowledgebank-brri.org

ডিএই ডট গব ডট বিডি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাইট
URL: http://www.dae.gov.bd

বাড়ি ডট গব ডট বিডি বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউটের সাইট
URL: http://www.bari.gov.bd

বিনা ডট গব ডট বিডি বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাইট
URL: http://www.bina.gov.bd

এসসিএ ডট গব ডট বিডি বীজ প্রত্যয়ন সংস্থার সাইট
URL: http://www.sca.gov.bd

ই-কৃষি কৃষি বিষয়ক তথ্যভিত্তিক ওয়েব সাইট
URL: http://www.ekrishi.com

সোর্স : এগ্রোবাংলা

ট্যাবনেবিং কি? ট্যাবনেবিং ব্যবহার করে ফেসবুক পাসওয়ার্ড হ্যাকের উপায়


আজ আমরা শিখব ট্যাবনেবিং ব্যবহার করে কিভাবে ফেসবুকের পাসওয়ার্ড হ্যাক করতে হয়। ট্যাবনেবিং হচ্ছে একটি উন্নতমানের ফিশিং পদ্ধতি, যা ওয়েবসাইটের পাসওয়ার্ড হ্যাক করতে ব্যবহার করা হয়। সাধারন ফিশিং এ্যাটাক ফেসবুকের মাধ্যমে ধরে ফেলা যায় কারন বর্তমানে ফেসবুক কিছু অতিরিক্ত কোড ব্যবহার করে যা পূববর্তী এ্যাড্রেসটি ভ্যারিফাই করে। যদি দেখা যায় যে, পূববর্তী এ্যাড্রেসটি কোন ফিশিং বা ফেক পেজ, তাহলে তা ব্যবহারকারীকে একটি সতর্কবার্তা প্রদর্শন করে যে, “তুমি একটি ফেক বা ফিশিং পেজ থেকে এসেছ, তাই তুমি তোমার ফেসবুক পাসওয়ার্ডটি দ্রুত পরিবর্তন কর”। ফলে ব্যবহারকারী সহজেই বুঝতে পারে যে, সে কারো দ্বারা হ্যাকিং এর শিকার হয়েছে এবং সে তার পাসওয়ার্ড দ্রুত পরিবর্তন করে ফেলে। যার ফলে হ্যাকিং প্রচেষ্টাটি বিফলে যায়।

পুরনো ফিশিং পদ্ধতিটি নতুনদের জন্য যারা মূলত স্ক্রিপ্ট কিডি বা নিওবাই। যেহেতু প্রযুক্তি ও কোড প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ও শক্তিশালী হচ্ছে সেদিকে খেয়াল রেখে হ্যাকারদেরও হ্যাকিং পদ্ধতি আরো উন্নত করতে হবে।

ট্যাবনেবিং ও পুরনো ফিশিং পদ্ধতি মোটামুটি এক রকমই। তবে তাদের মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে, ফিশিং আপনাকে একটি নির্দিষ্ট ওয়ের এড্রেসে ফিরিয়ে নিয়ে যায় যেখানে ট্যাবনেবিং ব্রাউজারে একটি মেটা রিফ্রেশ ফিচার ব্যবহার করে যা ওয়েব ব্রাউজারকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর পেজটি রিফ্রেশ করতে বাধ্য করে, তবে রিফ্রেশের সময়টি হ্যাকার নির্ধারন করে দেন। মেটা রিফ্রেশ হচ্ছে একটি মেটা ট্যাগ যেটা ওয়েব পেজের হিডার অংশে (যারা এইচ.টি.এম.এল জানেন তারা ভালো বুঝতে পারবেন) ব্যবহৃত হয়। এটা সোর্স পেজ থেকে নির্দিষ্ট সময় পর নির্ধারিত ওয়েব সাইটে ট্রাফিক পাঠায়। যেহেতু এটা একটা মেটা ট্যাগ সেহেতু এটা শুধু প্রক্তিয়াটি সম্পন্ন করে এবং ব্রাউজার কুকিতে কোন ডাটা সংরক্ষিত হয়না। এখানেই হচ্ছে মূল বিষয়টি, যখন ফেসবুক পূববর্তী ওয়েব ঠিকানাটি চেক করে যে, ব্যবহারকারী কোথা থেকে এসেছে তখন সে কিছুই পায় না, যেহেতু হ্যাকার রিফ্রেশ সেট করে রেখেছে। নতুন একটা ট্যাবে ফেসবুক খুললে যা হয় এটা ঠিক তেমন হয়ে যায়, সোর্স এড্রেসটি মুছে যায়। আর যেহেতু কোন কুকি থাকে না সেহেতু ধরা পরার উপায় থাকে না বললেই চলে। তখন ফেসবুক বুঝতে পারে ব্যবহারকারী সাধারনভাবেই ফেসবুকে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।

ট্যাবনেবিং করতে আমাদের যা প্রয়োজন হবে :-
.    ফিশিং পেজ
.    একটি পিএইচপি সাপোর্ট করে এমন ওয়েব সার্ভার এবং পেজগুলোকে সেখানে আপলোড করে দেয়া
.    শিকারের কাছে পাঠিয়ে দেয়া

যেভাবে ট্যাবনেবিং ব্যবহার করে ফেসবুকের পাসওয়ার্ড হ্যাক করব :-
এই পদ্ধতিতে ফেসবুকের পাসওয়ার্ড হ্যাক করতে পাঁচ মিনিটেরও কম সময়ের প্রয়োজন হয়। এই পদ্ধতিটি প্রাথমিক পযার্য়ের, পরবর্তীতে ট্যাবনেবিং এর আরো পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হবে আশা করছি। 


নিচের পদ্ধতিটি অনুসরন করুন :
.    এখান থেকে ফিশিং পেজগুলো ডাউনলোড করুন
.    আনজিপ করলে আপনি মোট চারটি ফাইল পাবেন
.    এখানে রেজিষ্ট্রেশন করুন এবং ফাইলগুলো আপলোড করুন
.    এখন ইনডেক্স (index) ফাইলটি খুলুন এবং এটার লিংকটি শিকারের কাছে পাঠিয়ে দিন।
.    পাসওয়ার্ড ফাইলটি চেক করুন, শিকারের পাসওয়ার্ড পাওয়ার জন্য।


ফেসবুক মেসেজে লিংকটি পাঠাতে চাইলে এভাবে পাঠান : http://*iMahediHasan.*blogspot*.com তারপর বলুন * চিন্হটি উঠিয়ে দিতে।


অনুগ্রহপূবর্ক কেউ নতুনদের প্রতারিত করবেন না, এই টিউটোরিয়াল এই জন্য যে, যাতে আপনারা নিজেদেরকে হ্যাকারদের প্রতারনা থেকে রক্ষা করতে পারেন, ই-মেইলে আসা বিশ্বাসযোগ্য নয় এমন লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থেকে। আমি চাইনা কেউ এর ভুল প্রয়োগ করুক, তাই কিভাবে ফিশিং মেইল পাঠাতে হয়, এ নিয়ে আলোচনা করা থেকে বিরত থাকলাম। সবাই ভালো থাকবেন।

ই-মেইল সাবস্ক্রিপশন

Enter your email address:

Delivered by FeedBurner

ক্যাটাগরীসমূহ

পৃষ্ঠাসমূহ

Creative Commons License
This work is licensed under a Creative Commons Attribution 3.0 Unported License.
Protected by Copyscape

ব্লগটি মোট পড়া হয়েছে

বাঙলা ব্লগ. Powered by Blogger.

- Copyright © মেহেদী হাসান-এর বাঙলা ব্লগ | আমার স্বাধীনতা -Metrominimalist- Powered by Blogger - Designed by Mahedi Hasan -